বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে মোদির মেয়াদ বাড়ল

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: রয়টার্স
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: রয়টার্স

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানো হয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে মোদিকে আরও তিন বছরের জন্য মনোনীত করেছেন।

গত সপ্তাহে আচার্য পদে নিয়োগের জন্য বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির বৈঠক শেষে তিন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম পাঠায় বিশ্বভারতী। রাষ্ট্রপতি তিনজনের মধ্য থেকে মোদিকেই আচার্য পদে ফের মনোনীত করেন। গত শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে বিশ্বভারতীর কাছে মোদির আচার্য পদের মেয়াদ বৃদ্ধিসংক্রান্ত চিঠি আসে।

গতকাল শনিবার বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক সবুজকলি সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে জানান, রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে তাঁদের জানানো হয়, বিশ্বভারতীর আচার্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আরও তিন বছরের জন্য মনোনীত করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

প্রথম দফায় বিশ্বভারতীর আচার্য হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একবারও আসেননি শান্তিনিকেতনে। ২০০৮ সালে আচার্য হিসেবে এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। এর আগে অটল বিহারি বাজপেয়িও প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় একবার এসেছিলেন শান্তিনিকেতনে। ২০১৩ সালে ‘ভিজিটর’ হিসেবে শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এবারই প্রথম ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আচার্য হিসেবে আসছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন উৎসবে যোগ দিতে। এই সমাবর্তন উৎসবে যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে উপস্থিত থাকার কথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

তবে বিশ্বভারতীর উপাচার্য প্রথম আলোকে বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসার কর্মসূচি তাঁরা এখনো পাননি।

এদিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ মে শান্তিনিকেতনে নির্মিত ‘বাংলাদেশ ভবন’-এর উদ্বোধন করবেন। এ সময় উপস্থিত থাকবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। দুই নেতার বৈঠকও হবে ওই দিন। ‘বাংলাদেশ ভবন’ নির্মাণের জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে দুই বিঘা জমি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকার ভবন নির্মাণের জন্য ২৫ কোটি রুপি দিয়েছে।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন নির্মাণের প্রস্তাব গৃহীত হয়। এই বাংলাদেশ ভবনে থাকছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসংক্রান্ত নানা ঐতিহাসিক তথ্য, গ্রন্থাগার, মিলনায়তন, বাংলাদেশ সম্পর্কে গবেষণার নানা তথ্য, চিত্রশালাসহ বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নানা স্মারক। থাকবে রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশ অবস্থানের নানা তথ্য, ইতিহাস, স্মারক এবং চিত্রাবলি।

শেখ হাসিনা পরদিন ২৬ মে যাবেন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের আসানসোলে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে তিনি যোগ দেবেন বিশেষ সমাবর্তন উৎসবে। এই উৎসবেই নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হবে সাম্মানিক ডিলিট। কলকাতায় কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতার এলগ্রিন রোডে অবস্থিত স্বাধীনতাসংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাসভবন পরিদর্শন করারও কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।