ভারতে গোহত্যার অভিযোগে এক মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪

ভারতের মধ্যপ্রদেশে এক মুসলিম ব্যক্তিকে গোহত্যার অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত শুক্রবার মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলায় এ ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম সিরাজ খান (৪৫)। তিনি দরজির কাজ করতেন। গত শুক্রবার সকালে তাঁকে পেটানো হয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা অরবিন্দ তিওয়ারি এ খবর নিশ্চিত করেছেন। সিরাজ খানের বন্ধু শাকিল মকবুলের ওপরও একই অভিযোগে হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনার পর গতকাল শনিবার ওই এলাকায় অতিরিক্ত ৪০০ পুলিশ সদস্যকে মোতায়েন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অরবিন্দ তিওয়ারি বলেন, ‘আমরা চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তাঁদের বিচারিক হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। হামলার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’ অরবিন্দ আরও জানান, ঘটনাস্থলে গরুর মাংস ও একটি বাছুরের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গরুকে ধর্মীয়ভাবে পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে গোহত্যা বা গরুর মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ নিষিদ্ধ। মধ্যপ্রদেশে গোহত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাদণ্ড। তবে ভারতের অন্যান্য রাজ্যে এই অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন শাস্তির বিধানও রয়েছে।

২০১৬ সালে ভারতজুড়ে শুরু হয় বিজেপির নেতা-কর্মীদের গোরক্ষা কর্মসূচি। কসাইখানার দিকে গরু নিয়ে যেতে দেখলেই পথ আগলে দাঁড়াত গোরক্ষকেরা। আর চলত মারধর। এখনো যে তা বন্ধ হয়নি, মধ্যপ্রদেশের এ ঘটনা সেটিই মনে করিয়ে দিল। মানবাধিকারকর্মীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার গোরক্ষা কর্মসূচিতে জড়িত ব্যক্তিদের অপরাধের শাস্তির বিষয়ে খুব একটা নজর দিচ্ছে না। গত বছর দুটি পৃথক ঘটনায় গরু পাচারের অভিযোগ এনে এক খামারিকে এবং গোহত্যার অভিযোগ তুলে ট্রেনের মধ্যে এক মুসলিম কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।