পটোলগুলো চিরতেই হাজার হাজার ইউরো
পটোলচেরা আঁখির কথা শোনা যায়। পটোলচেরা ইউরোর কথা কেউ শুনেছে কখনো? বাস্তবে কিন্তু তা-ই ঘটেছে। গত সোমবার রাতে দুই যুবক ব্যাগভরা পটোল নিয়ে কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাজির। পুরো ১০ কেজি পটোল। এসব পটোল চিরে পাওয়া গেছে ৫৫ হাজার ইউরো।
ইউরো পাচারের চেষ্টার অভিযোগ ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যুবক দুই যাত্রী কলকাতা থেকে ব্যাংকক যাচ্ছিলেন। সোমবার রাতে ছিল তাঁদের ফ্লাইট। দুই যাত্রী বিমানবন্দরে এসে তাঁদের বোর্ডিং পাস নেওয়ার সময় বিমানের লাগেজে তুলে দেয় ব্যাগ দুটি। এরপর হ্যান্ডব্যাগ নিয়ে অভিবাসন দপ্তরের কাজ সেরে শুল্ক দপ্তরে পৌঁছালে তাঁরা সন্দেহের চোখে পড়েন বিমানবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তাদের। কথাবার্তা ও চালচলনে সন্দেহ হলে তাঁরা জেরা শুরু করেন ওই দুই যাত্রীকে। পরে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয় ওই দুটি কালো ব্যাগ। তবে ব্যাগ খুলে হতবাক হয়ে যান কর্মকর্তারা। ব্যাগে শুধু পটোল রয়েছে। যাত্রী দুজন দাবি করেন, বন্ধুদের জন্য এই পটোল নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি ব্যাগে রয়েছে ১০ কেজি করে পটোল।
এরপর শুল্ক কর্তারা একটি পটোল বের করে ভেঙে দেখেন, এতে নিখুঁতভাবে রাখা হয়েছে ৫০০ ইউরো। একের পর এক পটোল ভাঙতেই বেরিয়ে আসতে থাকে ইউরো। মোট ৫৫ হাজার ইউরো পাওয়া যায় পটোল থেকে। বড় বড় পটোলের ভেতর ফাঁপা করে নিয়ে এতে সরু করে মুড়িয়ে ভরা হয়েছিল ৫০০ ইউরোর নোট। তারপর চেরা অংশ জুড়ে দেওয়া হয়েছিল আঠা দিয়ে। বাইরে থেকে বোঝার কোনো উপায় ছিল না যে পটোলগুলো চেরা বা এতে ইউরো রয়েছে। তবে সব পটোলে ইউরো ভরা ছিল না। দুটি ব্যাগভর্তি পটোলের মধ্যে ১১০টিতে ৫০০ ইউরোর নোট পাওয়া যায়। এই মুদ্রার মূল্য ভারতীয় রুপিতে ৪৬ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ বলে জানিয়েছে বিমানবন্দরের শুল্ক দপ্তর। এ ছাড়া ওই দুই যাত্রীর প্যান্টের পকেট থেকেও পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তার দুই যুবকের আদিবাস বিহারে। তাঁদের একজন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার খড়দহে আর অন্যজন উত্তর প্রদেশের রুদ্রপুরে থাকেন। গ্রেপ্তার হওয়া দুজনের পাসপোর্ট পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁরা মাঝেমধ্যেই ব্যাংকক যান। তবে নিরাপত্তার কারণে যুবকদের নাম প্রকাশ করেনি শুল্ক দপ্তর।