মাইকেল জ্যাকসনের সেই নাচের রহস্য

কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মাইকেল জ্যাকসনের সেই নাচের মুদ্রা নিয়ে আজও চর্চা হয়। সবার মনেই প্রশ্ন, গোড়ালির ওপর ভর করে অভিকর্ষকে উপেক্ষা করে কীভাবে তিনি সামনের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। প্রায় অসম্ভব এই মুদ্রা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক কম হয়নি। গবেষণাও হয়েছে।

এবার সম্ভবত এই রহস্যের উপযুক্ত ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। ভারতের চণ্ডীগড়ের পোস্টগ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড রিসার্চের একদল গবেষক বলছেন, জাদুটা আসলে মাইকেলের জুতা আর তাঁর শারীরিক সক্ষমতার মধ্যেই ছিল। স্নায়ু বিশেষজ্ঞদের বৈশ্বিক সংগঠন আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব নিউরোলজিক্যাল সার্জনসের জার্নাল অব নিউরোসার্জারি সাময়িকী গতকাল মঙ্গলবার ভারতের ওই বিশেষজ্ঞদের একটি পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেছে।

মাইকেল জ্যাকসন
মাইকেল জ্যাকসন

১৯৮৭ সালে মুক্তি পায় মাইকেল জ্যাকসনের ‘স্মুথ ক্রিমিনাল’ শিরোনামের গান ও তাঁর মিউজিক ভিডিও। এই ভিডিওর একটা পর্যায়ে তিনি ও তাঁর আশপাশের কয়েকজন মিলে কেবল গোড়ালির ওপর ভর করে পুরো শরীরটা সামনের দিকে নিয়ে যান। অত্যন্ত প্রশিক্ষিত একজন নৃত্যশিল্পীর পক্ষেও ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রির বেশি সামনের দিকে ঝোঁকা সম্ভব নয়। কিন্তু অভিকর্ষকে উপেক্ষা করে মাইকেল ঝুঁকেছিলেন ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত। নাচের এই মুদ্রা নিয়ে এরপর থেকেই শোরগোল পড়ে যায়।

চণ্ডীগড়ের পোস্টগ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড রিসার্চের সহযোগী অধ্যাপক মঞ্জুল ত্রিপাঠী ও তাঁর সহকর্মীদের ভাষ্য, শরীর সোজা রেখে সামনের দিকে ঝোঁকার চেষ্টা করলে পায়ের পেছন দিকে গোড়ালির অ্যাকিলিস টেন্ডনে প্রবল টানের সৃষ্টি হয়। যত বেশি ঝোঁকা হয় তত টান বাড়ে। মাইকেলের জুতা এ ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।

মঞ্জুল ত্রিপাঠী বলেন, মাইকেলের জুতা জোড়ার হিলের নিচে ভি-আকৃতির ছিদ্র ছিল, যাতে একটি করে শক্ত পেরেকের মতো কিছু একটা সংযুক্ত ছিল। এটিই নাচের ওই মুদ্রায় মাইকেলকে অতিরিক্ত সক্ষমতা দিয়েছে। কথিত রয়েছে, বিশেষ ওই জুতার ধারণা তিনি ধার করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশবিজ্ঞানীদের জন্য তৈরি বিশেষ জুতার নকশা থেকে। তাই বলে জুতার জাদুই শেষ কথা ছিল না। মাইকেলের সুষুম্না আর দেহের নিম্নাংশের মাংসপেশি তুলনামূলক দৃঢ় ছিল।