ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করলেন পুতিন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

ইরানের সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার  নিন্দা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি মনে করেন, ইরান যদি এখন পুরোদমে পরমাণু কর্মসূচি শুরু করে, তাহলে এটি ইসরায়েলের জন্য ভয়াবহ অস্থিতিশীলতা ও নতুন হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

গতকাল শুক্রবার সকালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরাম (এসপিআইইএফ)-২০১৮’ সম্মেলনে একটি সেশনে অংশ নেন পুতিন। তখনই তিনি এসব কথা বলেন বলে সিবিএস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়। পুতিন বলেন, ‘আমরা এখনো উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ঝামেলা মেটাতে পারিনি। সেখানে আমরা একই ধরনের আরেকটি সমস্যা কীভাবে চাই?’

পুতিন আরও বলেন, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক পর্যবেক্ষকেরা যেখানে বলে এসেছেন, ইরান সব ধরনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলেছে, সেখানে এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘ইরানকে তাহলে কিসের শাস্তি দেওয়া হলো?’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে ইসরায়েল। এ প্রসঙ্গ টেনে পুতিন বলেন, এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলবে।

‘ইরান যদি এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যেতে চায় বা ছেড়ে দিতে চায়, তাহলে এটা কি ইসরায়েলের জন্য ভালো হবে? আর এটি হলে ইরানের পরমাণু কর্মকাণ্ড পুরোপুরি অস্বচ্ছ হয়ে উঠবে।’

ইরানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করলেও পুতিন ট্রাম্পের জন্য কিছু আশার কথা বলেছেন। তিনি আশা করেন, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্কে আমরা অবশ্যই খুশি নই। আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত।’

এই সেশনে পুতিনের পাশেই ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তিনি বলেন, রাশিয়া ইরান প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ইউরোপকে রক্ষায় সাহায্য করতে পারে। জবাবে পুতিন পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

ফোরামে দেওয়া বক্তব্য ও বৃহস্পতিবার পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় ম্যাখোঁ সব দলের বিভেদ ভুলে ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে দৃঢ় বন্ধনের আহ্বান জানান। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও ওই ফোরামে কথা বলেন এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার আহ্বান জানান।

সংবিধানে পরিবর্তন আনতে পারেন পুতিন
চলতি মাসে চতুর্থবারের মতো প্রেসিডেন্ট হয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি প্রেসিডেন্ট পদের সংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলবেন বলে সম্মেলনে আসা আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলোর সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে জানান। তবে এরই মধ্যে কয়েকজন পর্যবেক্ষক ধারণা করছেন, পুতিন হয়তো সংবিধানে পরিবর্তন আনবেন। রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার পর তৃতীয়বার এই পদে লড়াই করা যায় না।