প্লাস্টিক বর্জ্যের ধরন নিয়ে ত্রিপুরার অর্পণসহ কয়েকটি সংস্থার সমীক্ষা

অর্পণের বর্জ্য সংগ্রহ অভিযান। ছবি: প্রথম আলো
অর্পণের বর্জ্য সংগ্রহ অভিযান। ছবি: প্রথম আলো

প্লাস্টিকের ব্যবহারে শুধু নিজের ক্ষতি হয় না, পরিবেশ ও প্রতিবেশীরও ক্ষতি হয়। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ব্যাপক হারে প্লাস্টিক ব্যবহার বেড়েছে। এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে প্রতিবেশী বাংলাদেশেও—এমনটাই মনে করেন ত্রিপুরার পরিবেশবিদেরা।

প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ ও ধরন নিয়ে সমীক্ষা শুরু করেছে ত্রিপুরার সামাজিক সংস্থা অর্পণসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা। হিমালয়ের পাদদেশের রাজ্যগুলোয় চলছে এই সমীক্ষার কাজ। গতকাল শনিবার এই নমুনা সংগ্রহের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন পরিবেশমন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণ। প্রথম দিন মাত্র দুই ঘণ্টায় শহরের আটটি জায়গা থেকে ১২০ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য উদ্ধার হয়।

অর্পণের তরফে পরিবেশবিদ বিশ্বেন্দু ভট্টাচার্য আজ রোববার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্লাস্টিকের ব্যবহারে আমাদের শরীরের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু তার থেকেও বেশি ক্ষতি হচ্ছে অপচনশীল এই বস্তুর হাত ধরে পরিবেশের।’

বিশ্বেন্দুর মতে, ত্রিপুরার এই প্লাস্টিক বর্জ্য হাওড়া, গোমতী ও অন্যান্য খাল-বিলের মাধ্যমে বাংলাদেশে পৌঁছাচ্ছে। সেখান থেকে সেটা গিয়ে পড়ছে সমুদ্রে। ফলে সমুদ্রে দূষণ বাড়ছে।

বিশ্বেন্দুর আশঙ্কা, ২০৫০ সালে সামুদ্রিক মাছ ও জীবজন্তুর তুলনায় প্লাস্টিকের পরিমাণ বেশি হবে। মার খাবে জৈববৈচিত্র্য।

প্রাথমিক সমীক্ষা বিশ্লেষণ করে বিশ্বেন্দুর দাবি, ত্রিপুরায় প্লাস্টিকের মোড়কশিল্পই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর মতে, প্লাস্টিকের মোড়কে বিভিন্ন বাজারজাত সামগ্রী পরিবেশের খুব ক্ষতি করছে।

বিশ্বেন্দু ভট্টাচার্য ত্রিপুরার তুলনায় প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। কিন্তু ত্রিপুরার বর্জ্য সেখানকার পরিবেশের পক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই তাঁর অভিমত।

প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে তিনি আধুনিক বিজ্ঞানের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন সরকারকে। তাঁর মতে, এই বর্জ্য প্লাস্টিক ব্যবহার করেই জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। এমনকি, নির্মাণকাজেও ব্যবহার করা যেতে পারে প্লাস্টিক।

মেঘালয়ে প্লাস্টিক আবর্জনা ব্যবহার করে রাস্তাও নির্মিত হয়েছে।

বিশ্বেন্দু জানিয়েছেন, তাঁদের এই সমীক্ষার প্রতিবেদন তাঁরা আগামী ১ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেবেন। সেই সঙ্গে থাকবে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনায় অর্পণের পরামর্শও।