বার্লিনে কট্টরপন্থী দলের বিরুদ্ধে ৫ হাজার মানুষের বিক্ষোভ

বার্লিনের বিজয়স্তম্ভ চত্বরে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। ছবি: ছবি সংগৃহীত
বার্লিনের বিজয়স্তম্ভ চত্বরে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। ছবি: ছবি সংগৃহীত

জার্মানির রাজধানী বার্লিনে কট্টরবাদী অলটারনেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড (এএফডি) দলটির বিরুদ্ধে প্রায় ৫ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীরা বলেছে, জার্মানির বর্ণবাদী এই দল শুধু জার্মানির পার্লামেন্টেই নয়, তারা জার্মানির অতীত ইতিহাস ভুলে আবারও জার্মানির সমাজব্যবস্থায় বিভক্তি ডেকে আনার চেষ্টা করছে। এর আগে এএফডির প্রায় পাঁচ হাজার সমর্থক বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করে।

গতকাল রোববার সকাল থেকেই জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাস ও ট্রেনযোগে অলটারনেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড (এএফডি) দলটির প্রায় পাঁচ হাজার সমর্থক বার্লিনের প্রধান রেলওয়ে স্টেশন ওয়াশিংটন চত্বরে জমা হয়। কালো-লাল-সোনালি জার্মানির পতাকা হাতে শহরের কেন্দ্রে বার্লিন গেটের দিকে অগ্রসর হয় তারা। কট্টরপন্থী দলটি চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলসহ শরণার্থী, অভিবাসী ও জার্মানিতে তথাকথিত ইসলামীকরণের বিরোধী স্লোগান দেয়। মিছিল শেষে বার্লিন গেট প্রাঙ্গণে এএফডি দলটির সভাপতি আলেক্সজান্ডার গাউল্যান্ড তাঁর বক্তব্যে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের রাজনীতিসহ জার্মানির আন্তসাংস্কৃতিক সমাজব্যবস্থার সমালোচনা করেন।

কট্টরপন্থী এএফডির এই বিক্ষোভের বিরুদ্ধে বার্লিনের বর্ণবাদবিরোধী জোট আয়োজিত বিক্ষোভে প্রায় পঁচিশ হাজার মানুষ অংশ নেন। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই বার্লিনের স্প্রে নদীর ওপর নানা নৌযান ভাসিয়ে বর্ণবাদবিরোধী বড় বড় ফেস্টুন বহন করেন। প্রায় ৫ হাজার বিক্ষোভকারী বার্লিনের বিজয়স্তম্ভ চত্বর থেকে বার্লিন গেট পর্যন্ত বর্ণবাদবিরোধী নানা পোস্টার-স্লোগানসহ নৃত্য ও ২৫টি বড় মোটরযানে স্পিকার লাগিয়ে সংগীতের আয়োজন করে।

বার্লিনের স্প্রে নদীতে বর্ণবাদবিরোধী নানা পোস্টারযুক্ত নৌযান। ছবি: ছবি সংগৃহীত
বার্লিনের স্প্রে নদীতে বর্ণবাদবিরোধী নানা পোস্টারযুক্ত নৌযান। ছবি: ছবি সংগৃহীত

গত ২৪ অক্টোবর জার্মানির জাতীয় নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ ভোট পেয়ে পার্লামেন্টে ৯২ আসন পায় এএফডি। কট্টরবাদী এএফডি দলটি এখন জার্মানির পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধী দল। নতুন পার্লামেন্টে অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই দলটি নানা রকম বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়ে পার্লামেন্টের পরিবেশ নষ্ট করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এর আগে জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ভালটার স্টাইনমায়ার জার্মানিতে শরণার্থী ও অভিবাসীবিরোধী কট্টরপন্থীদের সমালোচনা করে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী একটি অস্থির সময় চলছে এবং যুদ্ধসহ নানা ঘটনার কারণেই শরণার্থীরা দেশত্যাগী হচ্ছেন।

শরণার্থী ও অভিবাসীদের কারণে জার্মানির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আত্মপরিচয়ের সংকটের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের সমালোচনা করেন স্টাইনমায়ার। তাঁদের অতীত ইতিহাসে না ফিরে ভবিষ্যৎ জাতি বিনির্মাণের কথা বলেন। সবাইকে অদৃশ্যমান ভিন্ন এই প্রাচীরকে জয় করার আহ্বান জানান।