এবার সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিডিও প্রচার

দীর্ঘদিন ধরে জনসমক্ষে ‘অনুপস্থিতি’ থাকা এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে একটি ভিডিও প্রচার করেছে দেশটি। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক বৈঠকে মোহাম্মদ বিন সালমান উপস্থিত আছেন। অন্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ওই বৈঠকের ভিডিও প্রচার করেছে।

ওই ভিডিওর বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার সিএনএনের খবরে বলা হয়, গত মঙ্গলবার জেদ্দায় অর্থনৈতিক ও উন্নয়নবিষয়ক কমিটির এক বৈঠকে মোহাম্মদ বিন সালমান উপস্থিত আছেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ওই বৈঠকের ভিডিও প্রচার করেছে।
তবে ভিডিওটি কবে, কখন, কোথায় করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করতে পারেনি সিএনএন।

দীর্ঘদিন ধরে জনসমক্ষে ‘অনুপস্থিত’ থাকায় মোহাম্মদ বিন সালমানের বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে অনেক খবর বের হচ্ছিল। খবরে বলা হচ্ছিল, গত ২১ এপ্রিল রিয়াদে রাজপ্রাসাদে এক ‘অভ্যুত্থানচেষ্টায়’ গুলিবিদ্ধ হয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান মারা গেছেন। এর প্রায় এক মাস পর তিনি বৈঠক করছেন, এমন ছবি দেশটির রাজপরিবার প্রকাশ করে। এরই মধ্য ফিফা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের ছবিও প্রকাশিত হয়।

এরই মধ্য সৌদি আরবের ভিন্নমতাবলম্বী নেতা মোহাম্মাদ আল-মাসারি দাবি করে বসেন, ২১ এপ্রিল রিয়াদে রাজপ্রাসাদের বাইরে গোলাগুলির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এ কারণেই গত এক মাস প্রকাশ্যে আসেননি তিনি।

বর্তমানে ব্রিটেনে নির্বাসিত মোহাম্মাদ আল-মাসারি লেবাননের আল-মায়াদিন টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ২১ এপ্রিলের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে একটি বাংকারে আশ্রয় নিয়েছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। আল-মাসারির দাবি, সৌদি সরকার ওই অভ্যুত্থানচেষ্টা এবং প্রিন্সের আহত হওয়ার ঘটনা স্বীকার করতে চায় না। এ কারণে সেসব ঘটনাকে আড়াল করতে শিগগিরই মিডিয়ার সামনে আসবেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি বলেন, সেদিন সত্যিই অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল। সে ঘটনায় যুবরাজ গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। গাড়ি থেকে ভারী মেশিনগান দিয়ে সেদিন গুলি চালানো হয়। প্রিন্স সালমান কয়েকটি দেশ সফর শেষে রিয়াদে ফেরার পরপরই এ ঘটনা ঘটে।

২১ তারিখের ওই ঘটনার পর এপ্রিলের শেষ দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পের রিয়াদ সফরের সময়ও যুবরাজকে দেখা না যাওয়ায় গুঞ্জন আরও জোরালো হয়। তবে সৌদি দূতাবাসের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এমন গুঞ্জনকে ‘ভুয়া খবর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে শত্রুপক্ষ এসব প্রচার চালিয়েছে।’

এরপরই ২৭ এপ্রিল তোলা সৌদি যুবরাজের একটি ছবি প্রকাশ করে রাজপরিবার। তখন বলা হচ্ছিল, ২১ এপ্রিলে হামলা হয়ে থাকলে ২৭ এপ্রিলে এক অনুষ্ঠানে হাজির হওয়া কীভাবে সম্ভব?

২১ এপ্রিল অনেকগুলো গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছিল, রিয়াদে সৌদি রাজপ্রাসাদে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়। স্থানীয় বেশ কটি গণমাধ্যম জানায়, ঘটনার সময় সৌদি বাদশা সালমান প্রাসাদ ছেড়ে কাছাকাছি একটি সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রসাদের কাছ দিয়ে যাওয়া একটি ড্রোনকে নামাতে গুলি ছোড়েন নিরাপত্তাকর্মীরা।