বনে আজ থেকে শুরু জিএমএফ সম্মেলন

‘বৈশ্বিক অসাম্য’ প্রতিরোধ করার মন্ত্র ধারণ করে আজ সোমবার জার্মানির বন শহরে তিন দিনব্যাপী গ্লোবাল মিডিয়া ফোরাম (জিএমএফ) শুরু হচ্ছে। এবারের সম্মেলনের নির্বাচিত আলোকচিত্রের অন্যতম মূল থিম হিসেবে বাংলাদেশের একটি আলোকচিত্র ঠাঁই পেয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের কোনো শহরের জলমগ্ন পথে চার চাকাই ডুবন্ত অবস্থায় একটি বাস চলছে। আর সেখানে পাদানিতে ঝুলে থাকা কয়েকজন তরুণ যাত্রীর মধ্যে একজন নিবিষ্ট চিত্তে মোবাইলের পর্দায় চোখ রেখেছে।

১১ থেকে ১৩ জুন অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনের বিষয়বস্তু নির্ধারণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদানে যুক্ত রয়েছে জার্মানির কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবারের সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও বক্তব্য দেবেন। সম্মেলনের প্রথম দিনে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করবেন বুলগেরিয়ার ইউরোপীয় কমিশনের ডিজিটাল অর্থনীতিবিষয়ক কমিশনার মারিয়া গ্যাব্রিয়েল, জার্মান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মিশেল মুন্তেফারিং।

জার্মান বেতার সংস্থা ডয়চে ভেলে পরিচালিত জিএমএফের বার্ষিক সম্মেলন কয়েক বছর ধরে নিয়মিতভাবে বনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জিএমএফ সম্পর্কে ডয়চে ভেলের বক্তব্য হলো, এটিই বিশ্বের একমাত্র আন্তর্জাতিক মিডিয়া সম্মেলন, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুদ্রণ ও ডিজিটাল মাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সম্পাদক ও সংবাদকর্মী ছাড়াও রাজনীতি, ব্যবসা, নাগরিক সমাজ এবং একাডেমিক জগতের বিশিষ্টজনেরা অংশ নিচ্ছেন। এরবারের মূল প্রতিপাদ্য হলো গ্লোবাল ইনইকুয়ালিটিস বা বৈশ্বিক অসাম্য। সম্মেলনের আয়োজকরা মনে করেন, বৈশ্বিক অসাম্য সমকালীন বিশ্বের জন্য একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ বয়ে এনেছে। কিছু অসাম্য জনজীবনের সর্বত্র ছড়িয়ে আছে, যার কিছু খালি চোখে ধরা পড়ে, আর কিছু রয়েছে চোখের আড়ালে। বৈশ্বিক অসাম্যের শিকড় গভীরে বিস্তৃত ও জটিল।

বক্তারা আগামী তিন দিনে যেসব বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে আলোকপাত করবেন, তার মধ্যে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদ, আয়বৈষম্য, ডিজিটাল বিভাজন এবং ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতা। তাঁরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজবেন যে বিশ্বের দেশে দেশে এই ডিজিটাল যুগে এসেও কি মিডিয়া এই অসাম্য বা বৈষম্যের যে গতিপ্রকৃতি ও তার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থেকে তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে পারছে? আধুনিক প্রযুক্তি কি করে একই সঙ্গে অচলায়তন ভেঙে দেওয়া এবং নাগরিকদের মধ্যে সাম্য প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হচ্ছে? জ্ঞান ও ক্ষমতায় সমঅধিকার ও সমান অভিগম্যতা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে কতটা কাজে লাগানো সম্ভব?

প্রথম দিনের আলোচনার মূল বিষয় দুটি। প্রথমত, গণমাধ্যমে একচেটিয়াবাদ প্রতিষ্ঠা এবং দর্শক-শ্রোতার পক্ষে লড়াই। কী করে আধুনিক গণমাধ্যম জগৎ তথ্য অসাম্য এড়াতে পারে। দ্বিতীয়ত, একটি সমাজের প্রয়োজনের নিরিখে অসাম্যকে প্রশ্রয়দান এবং একটি সমাজ কোন সীমা পর্যন্ত অসাম্য সহ্য করতে পারে?