ইহুদিরা ইরাকে ফিরতে পারবেন

শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা মুকতাদা আল-সদর। ছবি: রয়টার্স
শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা মুকতাদা আল-সদর। ছবি: রয়টার্স

ইরাকের নতুন নেতা মুকতাদা আল-সদর জানিয়েছেন, ইরাক থেকে নির্বাসিত ইহুদিরা চাইলে ফিরে আসতে পারেন। তিনি তাঁদের স্বাগত জানাবেন। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকে এ তথ্য জানানো হয়।

গত মাসে দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা মুকতাদা আল-সদরের জোট জিতেছে। আল-সদর কট্টর মার্কিনবিরোধী বলে পরিচিত।

আল-সদরের এক অনুসারীর জানতে চেয়েছিলেন, অতীতের শাসনকালে বৈষম্যনীতির কারণে যেসব ইহুদি ইরাক ছেড়ে গেছেন, তাঁরা ফিরতে পারবেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, তাঁরা (ইহুদি) যদি ইরাকের প্রতি অনুগত থাকেন, তাহলে তাঁদের স্বাগত। তাঁরা ফিরলে পুরোপুরি নাগরিক অধিকার পাবেন।

ইরাকের নির্বাচন নিয়ে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে আল-সদর এমন মন্তব্য করলেন। নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল মুকতাদা আল-সদর ও ইরানসমর্থিত মিলিশিয়ার প্রধান হাদি আল-আমিরির দল। নির্বাচনে শিয়া মুসলিম ধর্মগুরু মুকতাদা আল-সদরের নেতৃত্বাধীন সায়রুন জোট একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছে। জোটের প্রধান শরিক আল-সদরের নিজস্ব দল আর ইরাকি কমিউনিস্ট পার্টি। সায়রুন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হায়দার আল-আবাদির নেতৃত্বাধীন জোটকে হারিয়ে দিয়েছে। তারা আছে তিন নম্বরে। দ্বিতীয় হয়েছে ইরানের আশীর্বাদপুষ্ট হাদি আল-আমিরির ফাতাহ। ১২ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল দুটি নিজেদের মধ্যে একটি জোট গঠনের ঘোষণা দিয়েছে।

তবে বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনরায় ভোটের আহ্বান জানান। পার্লামেন্ট নতুন করে ভোট গণনার আদেশ দেন। গত রোববার বাগদাদে ব্যালট বাক্সের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে মুকতাদা আল-সদর গৃহযুদ্ধ এড়িয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদিও নতুন করে ভোট চান না বলে জানান।

মুকতাদাকে কখনো কখনো ইসরায়েলের ধ্বংস কামনাকারী ইরানের মিত্র হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু মুকতাদার মন্তব্য প্রমাণ করে যে তিনি তাঁর প্রতিবেশী দেশ থেকে স্বাধীনভাবে চলতে চান। অনেক বিশ্লেষক মনে করিয়ে দিয়েছেন যে মুকতাদা আল-সদর অতীতেও ইরাকে ধর্মীয় গোঁড়ামির বদলে ধর্মীয় বৈচিত্র্য সন্ধানের পক্ষে বলেছেন এবং তিনি ইসরায়েলের নীতিমালার সমালোচনা করলেও তাঁর মোর্চা ইসরায়েলি রাষ্ট্র ও ইহুদিদের মধ্যে ফারাক করতে জানে।

১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে অনেক ইহুদি ইরাক ছেড়ে যান। তাঁরা ছিলেন মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ। ইরাকের সংবিধানও বর্তমানে ইহুদিবাদকে ধর্মীয় স্বীকৃতি দেয় না। তবে দেশটিতে আইএসের পতন ও সার্বিক সহিংসতা কমে যাওয়ায় অনেক ইহুদি দেশে ফিরতে চাইছেন বলে সাম্প্রতিক খবরে বলা হচ্ছে।