জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ৩

ভূমিকম্পে মাটির নিচে পানির পাইপ ফেটে রাস্তা তলিয়ে যায়। ছবি: রয়টার্স
ভূমিকম্পে মাটির নিচে পানির পাইপ ফেটে রাস্তা তলিয়ে যায়। ছবি: রয়টার্স

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে এক শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে প্রায় ২০০ জন। আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকাল আটটায় জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে ওসাকা শহরে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে কোনো সুনামি সতর্কতা জারি হয়নি।

দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনএইচকে জানায়, ভূমিকম্পে শহরে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভূমিকম্পে কারখানার বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া প্রধান পানির সংযোগে বিস্ফোরণ হয়েছে। প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার ভবন বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে জানায়, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩। গভীরতা ছিল ১৫ কিলোমিটার। তবে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা প্রথমে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ দশমিক ৯ বলে জানায়। পরে তা সংশোধন করে ৬ দশমিক ১ বলা হয়।

স্থানীয় পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নয় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ভূমিকম্পের সময় শিশুটি তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে হাঁটছিল। সেখানে দেয়াল ভেঙে তার ওপর পড়লে সে মারা যায়। এনএইচকে বলছে, দেয়াল ভেঙে পড়ে ৮০ বছরের আরেক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া অপর ব্যক্তি নিজের বাসায় বইয়ের শেলফের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন।

ভূমিকম্পের পর প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকার একত্র হয়ে কাজ করছে। প্রথম প্রাধান্য জনগণের জীবন রক্ষা করা।’

পুরোপুরি শহরকেন্দ্রিক এই শহরে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা খুব তীব্র নয় বলেই দেশটির গণমাধ্যমে বলা হয়। এনএইচকের এক ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাড়িতে আগুন নেভানো হচ্ছে। বাড়িটি পুড়ে গেছে। এ ছাড়া অন্যান্য গণমাধ্যমে দেখা যায়, মাটির নিচের পাইপ ফেটে রাস্তা তলিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেদনে জানা যায়, স্থানীয় অনেক ভবনের কাচ ভেঙে গেছে এবং কংক্রিটের দেয়াল ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের ঘটনায় ওসাকায় ট্রেন এবং সাবওয়ে যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।

এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাসার মেঝে খুব ভয়াবহভাবে কাঁপছিল। ঘরের সব বাসন মেঝেয় পড়ে ভেঙে যায়। আমার বাবা-মা পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছেন। তাঁদের বাসায় কোনো পানিও নেই। আমি তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে আনতে যাচ্ছি।’

এইজি শিবুয়া নামের এক ব্যক্তি জানান, এই ভূমিকম্প তাঁকে ১৯৯৫ সালের এক ভূমিকম্পের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সাড়ে ছয় হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।

দেশটির নিউক্লিয়ার রেগুলেশন অথোরিটি বলছে, স্থানীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় কোনো সমস্যা দেখা যায়নি, কিন্তু হুন্ডাসহ কিছু কোম্পানি তাদের স্থানীয় প্ল্যান্টে কার্যক্রম বন্ধ রাখে।

২০১১ সালের মার্চে জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সুনামি হয়। এতে সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফুকুশিমায় একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিধ্বস্ত হয়। এ সময় সুনামিতে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়।