ভারতের চেয়ে পারমাণবিক অস্ত্র বেশি পাকিস্তানের

রয়টার্স ফাইল ছবি।
রয়টার্স ফাইল ছবি।

সারা বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কমলেও এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত বাড়িয়েছে। এই দুই শত্রুদেশের বাজেটের একটি বড় অংশ খরচও করেছে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে। সুইডেনের থিঙ্কট্যাংক প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

এসআইপিআরআই বলেছে, চলতি বছরে পাকিস্তানের কাছে ১৪০-১৫০টি পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত থাকতে পারে, যা গত বছরের চেয়ে ১০টির বেশি। অপর দিকে ভারতের ভান্ডারে থাকতে পারে ১৩০-১৪০টি পারমাণবিক অস্ত্র। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ১২০-১৩০।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দুই দেশে ছাড়াও পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়া। ২০১৭ সালের শুরুতে এই নয়টি দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র ছিল ১৪ হাজার ৯৩৫টি। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে এই সংখ্যা কমে ১৪ হাজার ৪৬৫টিতে নেমেছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে বর্তমানে ৩ হাজার ৭৫০টি মোতায়েন রয়েছে। পারমাণবিক ক্ষমতাধর প্রতিটি দেশ দূরপাল্লার বিভিন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে পরীক্ষা করেছে। এই অবস্থায় যুদ্ধের পরিস্থিতিতে এসব দেশ যদি একটি পারমাণবিক অস্ত্রেরও ব্যবহার করে, তাতে গোটা বিশ্ব নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন করে স্থল, নৌ ও আকাশভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপব্যবস্থার উন্নতি করছে।

এসআইপিআরআই বলেছে, সংখ্যার বিচারে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে রাশিয়ার হাতে, ৬ হাজার ৮৫০টি। দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রে মজুত রয়েছে ৬ হাজার ৪৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র। এই দুই পরাশক্তি দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র সহস্র কোটায় থাকলেও বাকি দেশগুলোতে রয়েছে শতকের কোটায়। যেমন ফ্রান্সে ৩০০টি, চীনে ২৮০টি, যুক্তরাজ্যে ২১৫টি, ইসরায়েলে ৮০টি ও উত্তর কোরিয়ায় ১০-২০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।

সুইডেনের প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, প্রতিবেশী পাকিস্তানের চেয়ে দ্বিগুণ পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে চীনে। দেশটি তার পারমাণবিক অস্ত্র নিক্ষেপব্যবস্থার আধুনিকায়ন অব্যাহত রেখেছে এবং পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ধীরগতিতে বাড়াচ্ছে। আর বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের ৯২ শতাংশই রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্র কমানো ও সীমাবদ্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি হিসেবে ২০১০ সালে কৌশলগত অস্ত্র হ্রাস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া স্বাক্ষর করায় মূলত পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কমেছে। তবে পারমাণবিক অস্ত্র কমালেও যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয় দেশ তাদের পারমাণবিক অস্ত্র, যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপব্যবস্থা ও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কেন্দ্রগুলো প্রতিস্থাপন ও আধুনিকায়নে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প চালু রেখেছে।

এসআইপিআরআইয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষক শ্যানন কাইলে বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকায়ন অব্যাহত থাকায় পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে না।