আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ তালিকা প্রকাশে সময় চাইছে সরকার

এনআরসির কাজ চলছে। ছবি: প্রথম আলো
এনআরসির কাজ চলছে। ছবি: প্রথম আলো

বাঙালিদের দুশ্চিন্তা জিইয়ে রেখে এনআরসি (জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ) তালিকা প্রকাশে আরও সময় চাইছে আসাম সরকার। রাজ্য সরকারের এই মনোভাব সর্বোচ্চ আদালতকে জানাতে প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক প্রতীক হাজেলা। গোটা রাজ্যকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলার পাশাপাশি চর এলাকাগুলোর জিও-ম্যাপিং করতে চাইছে বিজেপি পরিচালিত আসাম সরকার।

এনআরসির প্রথম তালিকা প্রকাশিত হয় গত ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে। আসামের বাসিন্দা ৩ লাখ ২৯ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে মাত্র ১ লাখ ৯০ হাজার স্থান পান সেই তালিকায়। বাদ পড়েন মন্ত্রী বিধায়কেরাও।

অভিযোগ ওঠে, ধর্মীয় ও ভাষাগত দিক দিয়ে সংখ্যালঘুদের বাদ দেওয়ার। হিন্দু ও মুসলিমদের নাম বাদ পড়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন। একাধিক ব্যক্তি এনআরসির কারণে আত্মহত্যা করেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই দ্বিতীয় অর্থাৎ চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশ করার কথা ৩০ জুন। চলছে আসামের বাসিন্দাদের বংশবৃক্ষ পরীক্ষার কাজ। কিন্তু বন্যার কারণে সেই কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই সময় চেয়েছে রাজ্য।

এনআরসি প্রকাশে আরও সময় চাওয়ার সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই সংখ্যালঘুদের চাপে রাখতে দেরি করছে রাজ্য।

অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের তরফে এখন প্রস্তুতি তুঙ্গে। এনআরসি প্রকাশের পর কোনো রকম অশান্তি রুখে দিতে ভারত সরকারের কাছে ১৫০ কোম্পানি অতিরিক্ত আধাসেনা চাওয়া হয়েছে। বর্তমানে এনআরসির কাজে রাজ্য পুলিশ ছাড়াও ৮৫ কোম্পানি আধা সেনা রয়েছে।

এ ছাড়াও উত্তর-পূর্ব মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের কাছে রাজ্যে ২ হাজার ২৫১টি চরভূমি ম্যাপিংয়েরও অনুরোধ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার চাইছে প্রতিটি চরকেই জিও ম্যাপিংয়ের আওতায় নিয়ে আসতে।

এনআরসি নিয়ে হিন্দু ও মুসলিম বাঙালিদের ওপর বৈষম্যের অভিযোগ করেছেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য। প্রথম আলোর কাছে তাঁর অভিযোগ, আসামকে বাঙালিদের বসবাসের অনুপযুক্ত করে তোলার চেষ্টা চলছে।

আসাম সম্মিলিত মহাসংঘের কার্যকরী সভাপতি মতিউর রহমানের দাবি, এনআরসি আসামের আদি বাসিন্দাদের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা।