আসামে এনআরসির তালিকায় ৪০ লাখ মানুষ নেই

আসামের দীর্ঘপ্রতীক্ষিত এনআরসির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
আসামের দীর্ঘপ্রতীক্ষিত এনআরসির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো

আসামের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) তালিকা আজ সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। আসামে বসবাসকারী ৩ কোটি ২৯ লাখ মানুষ আবেদন করেছিলেন এনআরসি তালিকায় নিজেদের নাম তুলতে। ওই তালিকায় ঠাঁই হয়েছে ২ কোটি ৮৯ লাখ মানুষের। অর্থাৎ, আসামে বসবাসকারী ৪০ থেকে ৪১ লাখ মানুষ ‘ভারতীয়’ হিসেবে ওই তালিকায় নাম তুলতে পারেননি। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশকারী এনআরসির কো-অর্ডিনেটর অবশ্য বলেছেন, ‘এ তালিকা শুধু খসড়া, এটা চূড়ান্ত কিছু নয়। যাঁরা তালিকায় ঠাঁই পাননি, তাঁরা আবেদন করতে বা আপত্তি জানাতে পারবেন।’

তালিকায় নামের ব্যাপারে দাবি ও আপত্তির কার্যক্রম আগামী ৩০ আগস্ট থেকে শুরু হবে এবং ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।

ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল শৈলেশ বলেছেন, ‘আপত্তি জানানোর যথেষ্ট সুযোগ রাখা হচ্ছে। প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের ভয়ের কিছু নেই।’

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, আসাম ভারতের একমাত্র রাজ্য হিসেবে এর নাগরিকদের নাম নিবন্ধন করছে। অবৈধ অভিবাসী ভোট রাজ্যে বড় ভূমিকা পালন করে—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে নাগরিকদের নামের তালিকা করা হচ্ছে।

এনআরসির তালিকা প্রকাশ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই উদ্বেগে রয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। গোটা রাজ্যেই জারি করা হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। ৬টি জেলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।

আসামে বসবাসকারী ৩ কোটি ২৯ লাখ মানুষ আবেদন করেছিলেন এনআরসি তালিকায় নিজেদের নাম তুলতে। এর মধ্যে প্রথম দফায় মাত্র ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের নাম প্রকাশ করা হয়।

তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল টুইট করে বলেছিলেন, বৈধ নাগরিকদের সবারই নাম থাকবে তালিকায়। তাই আতঙ্কের কিছু নেই। ইন্টারনেট ও এসএমএসেও ফল জানা যাবে। নাম না থাকলে আগামী ৭ আগস্ট থেকে পুনরায় আবেদনও করা যাবে।

আসামে বাংলাদেশি শনাক্ত করতেই এনআরসি প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে চলছে গোটা প্রক্রিয়া। তবে এনআরসি নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। বিশেষ করে ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা হয়রানির অভিযোগে সরব।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেছেন, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় যদি নাম না থাকে, তাঁকে বিদেশি হিসেবে আচরণ করা হবে না। যাঁদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় থাকবে না, তাঁরাও নাম তালিকায় রাখার প্রমাণ করতে যথেষ্ট সুযোগ পাবেন।

এর আগে এনআরসি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা বিজেপির হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছিলেন, যাঁদের নাম তালিকায় থাকবে না, তাঁদের বের করে দেওয়া হবে।

অারও পড়ুন: আসামজুড়ে উত্তেজনা: বাংলাদেশ কতটা সতর্ক?