শৌচাগারের চেয়ে তিনগুণ বেশি নোংরা স্মার্টফোনের পর্দা!

শৌচাগারের চেয়ে তিন গুণ বেশি জীবাণু থাকে স্মার্টফোনের পর্দায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। প্রতীকী ছবিটি রয়টার্সের
শৌচাগারের চেয়ে তিন গুণ বেশি জীবাণু থাকে স্মার্টফোনের পর্দায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। প্রতীকী ছবিটি রয়টার্সের

সবচেয়ে নোংরা জায়গা কোনটি? চটজলদি উত্তর দিতে হলে মাথায় আসবে, শৌচাগার। কিন্তু কারও ভাবনাতেই আসবে না যে, এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি নোংরা একটি বস্তু সবাই পকেটে নিয়ে ঘোরেন! সেটি হলো, স্মার্টফোন। সুনির্দিষ্টভাবে বললে, স্মার্টফোনের পর্দাটিই (টাচ স্ক্রিন) যত নষ্টের গোড়া।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, শৌচাগারের চেয়ে তিন গুণ বেশি জীবাণু থাকে স্মার্টফোনের পর্দায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। ইন্সুরেন্সটুগো নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই গবেষণা চালায়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের এক-তৃতীয়াংশ কখনো স্মার্টফোনের পর্দা পরিষ্কারই করেননি।

বার্তা সংস্থা আইএএনএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণার জন্য ইন্সুরেন্সটুগো নামের প্রতিষ্ঠানটি তিনটি স্মার্টফোন নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছে। এগুলো হলো-আইফোন সিক্স, স্যামসাং গ্যালাক্সি এইট ও গুগল পিক্সেল। কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে সংগৃহীত এসব স্মার্টফোনে অ্যারোবিক ব্যাকটেরিয়া, ঈস্ট ও মোল্ড আছে কিনা-তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। দেখা গেছে, সব স্মার্টফোনেই ক্ষতিকর জীবাণু রয়েছে। সবচেয়ে বেশি পরিমাণে রয়েছে ফোনের পর্দা বা টাচ স্ক্রিনে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গড় স্মার্টফোনের পর্দায় যে পরিমাণে জীবাণু পাওয়া গেছে, তা কমোডের আসন বা শৌচাগারের তুলনায় তিন গুণ বেশি নোংরা। আর গড়ে প্রতি ২০ জন ব্যবহারকারীর মধ্যে মোটে একজন তাঁর স্মার্টফোনের পর্দা নিয়মিত পরিষ্কার করে থাকেন।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, স্মার্টফোনের পর্দায় থাকা এসব জীবাণু ত্বকের রোগসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ হতে পারে। পরীক্ষা করা স্মার্টফোনগুলোর পর্দার প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে গড়ে ৮৪ দশমিক ৯ ইউনিট জীবাণু পাওয়া গেছে। অন্যদিকে কমোড ও এর হাতলে থাকে সর্বোচ্চ ২৪ ইউনিট জীবাণু।

গবেষকেরা বলেছেন, স্মার্টফোনের পেছনের অংশে পাওয়া গেছে ৩০ ইউনিট জীবাণু। ফোন লক করার বাটনে থাকে গড়ে ২৩ দশমিক ৮ ইউনিট জীবাণু। হোম বাটনে থাকা জীবাণুর পরিমাণ ১০ দশমিক ৬ ইউনিট।

ইন্সুরেন্সটুগো নামক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা গ্যারি বিস্টোন বলেন, ‘আমরা সাধারণত সব সময় স্মার্টফোন সঙ্গে নিয়েই ঘুরি। এভাবেই নানা জায়গা থেকে ওই ফোনে বাসা বাঁধে জীবাণু।’

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারের মাত্রা বেড়েই চলেছে। মূলত ভার্চুয়াল জগতে সার্বক্ষণিক থাকার উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে স্মার্টফোন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক গবেষণায় জীবাণুর বিস্তারে স্মার্টফোনের ভূমিকার বিষয়টি জোরালো হয়েছে।