মমতার আঁকা ছবি কেনার এত টাকার উৎস কী?

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি বিপুল পরিমাণ অর্থে বিক্রি হওয়ার ঘটনা নিয়ে তৎপর ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। মমতার আঁকা ছবি কারা কিনেছিলেন, তা নিয়ে নতুন করে তদন্তে নেমেছে সিবিআই। ছবির ক্রেতাদের একে একে তলব করে সিবিআই জেনে নিচ্ছে এত মূল্য দিয়ে কেন তাঁরা ছবি কিনেছিলেন বা অর্থের উৎস কী ছিল।

মমতা কেবলই একজন রাজনৈতিক নেত্রী নন, তিনি একজন লেখিকা, কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক এবং চিত্রকরও। তাঁর ৪০টির বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। লিখেছেন বাংলা ও ইংরেজিতে। তাঁর বই হিন্দিতেও অনূদিত হয়েছে।

মমতার আঁকা ছবি বিক্রি করে কোটি টাকাও আয় করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এ নিয়ে ২০১৪ সালে কম জল ঘোলা হয়নি। ওই সময় অভিযোগ ওঠে মমতার ছবি বিক্রি হয়েছে নয় কোটি টাকার। সারদা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সুদীপ্ত সেন ১ কোটি ৮০ লাখ দিয়ে কিনেছিলেন মমতার আঁকা একটি ছবি। শুধু সারদা নয়, রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুও কিনেছিলেন মমতার ছবি প্রচুর অর্থ দিয়ে। সুদীপ্ত সেন সারদা অর্থ আত্মসাৎ মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার হন। এখন তিনি কারাগারে রয়েছেন।

সেই সময় অবশ্য মমতার এই ছবি বিক্রি নিয়ে রাজনৈতিক মঞ্চও উত্তাল ছিল। যদিও তৃণমূল দাবি করেছিল, দলীয় তহবিল গড়ার জন্য এই ছবি বিক্রি করা হয়েছিল। তখন এ কথাও বলা হয়েছিল, মমতার আঁকা ৩০০ ছবি বিক্রি হয়েছিল। মমতাও অনেককে বিনা মূল্যে ছবিও দিয়েছিলেন। সে সময় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, মমতার ছবির মূল্য ধার্য করা হয়েছিল তিন লাখ রুপি করে। তবুও লাখ লাখ রুপি দিয়ে কিনেছিলেন এই ছবি মমতার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা।

এর মধ্যে মমতার আঁকা ছবির এক ক্রেতা, মমতার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী শিবাজি পাঁজাকে দুবার অফিসে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। শিবাজি পাঁজা ৫০ লাখ রুপি দিয়ে মমতার ছবি কিনেছিলেন। এবার সেই টাকার উৎস কী, তা জানতে জেরা করেছেন শিবাজি পাঁজাকে। যদিও পাঁজা এর সপক্ষে নথি দিয়েছেন সিবিআইকে। এখন সেসব নথি খতিয়ে দেখছে সিবিআই। নথি যাচাইয়ের জন্য সিবিআই শিবাজি পাঁজার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কৌস্তভ রায়কেও জেরা করেছে। যদিও কৌস্তভ রায় বলেছেন, তিনি ছবি সম্পর্কে জানেন না। তবে ২০১১ সালে শিবাজি পাঁজা ব্যবসায় প্রচুর লাভ করায় সেই লাভের অর্থ থেকে কিনেছিলেন ওই ছবি।

সিবিআই দাবি করেছে, শিবাজি পাঁজার সেই ৫০ লাখ গিয়েছে তৃণমূলের মুখপত্রের ব্যাংক হিসাবে। সিবিআই আরও জানিয়েছে, ছবি বিক্রির অর্থ তৃণমূলের ব্যাংক হিসাবে এবং নগদেও দেওয়া হয়েছে।