সৌরজগতের বাইরে প্রথম চাঁদের দেখা

শিল্পীর চোখে কেপলার-১৬২৫বি গ্রহ ও তার চাঁদ।  ছবি: রয়টার্স
শিল্পীর চোখে কেপলার-১৬২৫বি গ্রহ ও তার চাঁদ। ছবি: রয়টার্স

সৌরজগতের বাইরে প্রথম চাঁদের দেখা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সূর্য যে ছায়াপথের সদস্য, সেই আকাশগঙ্গাতেই চাঁদটির অবস্থান। সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির সমান আকারের একটি গ্রহকে প্রদক্ষিণ করছে নেপচুনের সমান আকারের চাঁদটি।

বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞানশিক্ষায় সহায়তাকারী অলাভজনক সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স-এর সায়েন্স অ্যাডভান্সেস সাময়িকী গত বুধবার এ বিষয়ে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। নিবন্ধটি রচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড কিপিং এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী অ্যালেক্স টিশে।

নিবন্ধে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে সৌরজগতের বাইরের ওই চাঁদটির ব্যাপারে তথ্য পাওয়া গেছে। পরে হাবল টেলিস্কোপের মাধ্যমে এটিকে খুঁজে বের করা হয়। একে বিজ্ঞানীরা আপাতত এক্সোমুন বা বহিঃ চাঁদ বলে অভিহিত করছেন।

চাঁদটি পৃথিবী থেকে ৮ হাজার আলোকবর্ষ দূরে। শূন্য মাধ্যমে আলো প্রতি সেকেন্ডে ৩ লাখ কিলোমিটার অতিক্রম করে। সে হিসাবে এক বছরে আলো যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তা-ই এক আলোকবর্ষ।

অধ্যাপক ডেভিড কিপিং গবেষণা নিবন্ধে লিখেছেন, ‘আমাদের সৌরজগতের মানদণ্ডের দিক থেকে ওই চাঁদটি অনেক বড় এবং অদ্ভুত।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের চাঁদের পৃষ্ঠের কোনো জায়গা পাথুরে, আবার কোথাও বরফে ঢাকা। কিন্তু নতুন চাঁদটি এবং কেপলার-১৬২৫বি নামে যে গ্রহকে এটি প্রদক্ষিণ করছে, দুটোই গ্যাসীয় পদার্থে ভরা। আকারে নতুন চাঁদটি নেপচুনের সমান হলেও ভর অনেক বেশি। গ্রহটিও বৃহস্পতির সমান হলেও ভর বেশি। ঠিক এই জায়গাতেই খটকা লেগেছে বিজ্ঞানীদের। চাঁদ গঠনের প্রচলিত তত্ত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে নতুন চাঁদটির ক্ষেত্রে।

গবেষণা নিবন্ধে জানানো হয়েছে, সৌরজগতের সবচেয়ে বড় চাঁদ বৃহস্পতির গ্যানিমেডে। এর ব্যাস ৫ হাজার ২৬০ কিলোমিটার। নেপচুনের সমান হওয়ায় নতুন চাঁদটির ব্যাস ৪৯ হাজার কিলোমিটার বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে কেপলার-১৬২৫বি নামের গ্রহটি কেপলার-১৬২৫ নামে একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। নক্ষত্রটি সূর্যের চেয়ে ৭০ শতাংশ বড়। তবে তাপমাত্রা সূর্যের সমানই।