বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, আহত ২৫

বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানায় চলে উদ্ধার তৎপরতা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানায় চলে উদ্ধার তৎপরতা। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সোনারপুর থানার গোবিন্দপুরে আজ রোববার দুপুরে একটি বাজি কারখানায় এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এই বিস্ফোরণে ২৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের বারুইপুর এবং কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা সমাগত। দুর্গাপূজার পরে হবে কালীপূজা ও দীপাবলি উৎসব। আর এই উৎসবকে ঘিরে এখন বিভিন্ন বাজি কারখানায় চলছে বাজি বানানোর কাজ।

আজ দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের সোনারপুরের গোবিন্দপুরের একটি বাজি কারখানায় ঘটেছে এই বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের পর বাজি কারখানাটি আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বহু দূর থেকে। কারখানার আশপাশের বহু বাড়ির দরজা জানালার কাচ ভেঙে গেছে। উড়েও গেছে দরজা কপাট। বিস্ফোরণস্থলের কাছে রয়েছে একটি পুকুর। বিস্ফোরণের সময় বহু মানুষ এই পুকুরে এসে জীবনরক্ষার জন্য ঝাঁপ দেন বলে এলাকাবাসী জানান। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলেও এলাকাবাসীর দাবি।

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে আসে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে আসে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

এই কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটার খবর পেয়ে ছুটে আসে পুলিশ। কিন্তু এলাকার লোকজন পুলিশকে ঘিরে এই বেআইনি বাজি কারখানার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়। এরপর পুলিশ জনতাকে সরিয়ে ঘটনাস্থলে ঢোকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি গাড়ি দুর্ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর কাজে লেগে যায়। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুড়ে গেছে কারখানার বাজি তৈরির কাঁচামালসহ মজুত বাজি। পুড়ে গেছে কারখানায় কর্মরত কারিগরদের বহু সাইকেলও। মোটকথা, এই বিস্ফোরণের পর পুরোপুরি ধসে যায় কারখানাটি।

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এই দুর্ঘটনায় ২৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর। পুলিশ ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে বাজি কারখানার মালিককে। বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী একপর্যায়ে এই বিস্ফোরণের পর বাজি কারখানার মালিকের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর করে। মালিকের বাবা সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রয়োজনীয় লাইসেন্স নিয়ে এই কারখানায় বাজি বানানো হয়।

এর আগে ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এভাবে এই কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, এই বিস্ফোরণে কয়েকজন মারা গেলেও তাঁদের লাশ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এই বিস্ফোরণের কারণ নির্ণয়ের জন্য এনআইএর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।