রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ দিয়ে খাবার কেনার অভিযোগে নেতানিয়াহুর স্ত্রীর বিচার শুরু
জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ খরচ করে শতাধিক মানুষের খাবার কেনার অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর স্ত্রী বিচারের সম্মুখীন হয়েছেন। আজ রোববার দেশটির এক আদালতে এই অভিযোগে করা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এরই মধ্যে এমন অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বর্তমান স্ত্রীর নাম সারা নেতানিয়াহু। এর আগে আরও দুবার বিয়ে করেছিলেন বেনিয়ামিন। তাঁর দাবি, তাঁকে অসম্মানিত করতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নেতানিয়াহুর পরিবার বেশ কটি আইনি সমস্যার মোকাবিলা করছে। এ তালিকার সর্বশেষ সংযোজন হলো, সারার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের।
গত জুনে সারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। আইনজীবীরা বলছেন, সারা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের অপব্যবহার করেছেন। প্রায় ১ লাখ ডলার খরচ করে বাইরের ক্যাটারিং সার্ভিস থেকে খাবার কেনেন তিনি। ওই সময় কারণ দেখিয়ে তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রান্না করার লোক নেই, তাই বাইরে থেকে খাবার কিনতে হচ্ছে। অথচ তখন সেখানে রান্নার বাবুর্চি উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, জেরুজালেমের বিখ্যাত কিছু খাবারের দোকান থেকে এসব খাবার কেনা হয়েছিল। ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এভাবে মিথ্যা কারণ দেখিয়ে সারা খাবার কিনিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেরুজালেম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রোববার স্থানীয় সময় দুপুরে এই অভিযোগের বিচারকাজ শুরু হয়। এ অভিযোগের জনগুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তিনজন বিচারকের একটি প্যানেল মামলার বিচারকাজ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছেন। যদিও এই মামলা গত জুলাই মাসে শুরু হওয়ার কথা ছিল। পরে মামলার বিচারকাজ পেছানো হয়। তবে বিচারকাজ পেছানোর কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, কয়েক মাস ধরে এই বিচারকাজ চলতে পারে। বর্তমানে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নিজের বিরুদ্ধেই দুর্নীতিসহ একাধিক অভিযোগ তদন্তাধীন। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এসবের জের ধরে বেনিয়ামিনকে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়েও দিতে হতে পারে।
৫৯ বছর বয়সী সারা নেতানিয়াহু অবশ্য রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এর আগে সরকারি বাসভবনের কর্মীদের সঙ্গে বাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল সারার বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে এক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে এক কর্মীকে ৪৭ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণও দিতে হয়েছিল তাঁকে।