রাফায়েল কেনার বিষয় জানানোর নির্দেশ ভারতের সুপ্রিম কোর্টের

রাফায়েল যুদ্ধবিমান চুক্তিপ্রক্রিয়ার খুঁটিনাটি কেন্দ্রকে জানানোর নির্দেশ দিলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আজ বুধবার ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এই নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছেন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চুক্তিপ্রক্রিয়া কীভাবে এগিয়েছে, তা মুখবন্ধ খামে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে হবে।

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি জানিয়েছেন, চুক্তিপ্রক্রিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে তাঁরা আগে অবহিত হতে চান। তার আগে কারও সওয়াল তাঁদের বিচার্য হবে না। তাঁরা এ কথাও বলেন, যুদ্ধবিমান কেনাবেচার খরচ ও প্রযুক্তিগত বিষয় সম্পর্কে কোনো তথ্য তাঁরা জানতে চাইছেন না। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এই বেঞ্চে আরও রয়েছেন বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কল ও বিচারপতি কে এম যোসেফ।
ফ্রান্সের কাছ থেকে অত্যাধুনিক রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে ভারতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। কংগ্রেস এই কেনাবেচায় দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, কংগ্রেস আমলে ১২৬টি রাফায়েল কেনা নিয়ে কথাবার্তা এগোলেও কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসে বিজেপি সেই চুক্তি থেকে সরে আসে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফ্রান্সে গিয়ে ৩৬টি রাফায়েল কেনার কথা জানান। কংগ্রেসের দাবি, তাদের চুক্তি বাস্তবায়িত করা হলে ১২৬টি বিমান কিনতে খরচ হতো ৭৯ হাজার কোটি রুপি। সে জায়গায় বিজেপি সরকার ৩৬টি বিমান কিনছে ৫৯ হাজার কোটি রুপিতে। তাদের অভিযোগ, তাদের করা চুক্তি অনুযায়ী বিমানপ্রতি খরচ হতো ৫৭০ কোটি রুপি, এখন খরচ হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ কোটি রুপি। কংগ্রেসের আরও অভিযোগ, তাদের চুক্তি অনুযায়ী ১০৮টি বিমান প্রযুক্তি হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে তৈরি করা হতো রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেডের (হ্যাল) কারখানায়। কিন্তু নতুন চুক্তিতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বঞ্চিত করে সেই বরাত দেওয়া হয়েছে শিল্পপতি অনিল আম্বানির এক সংস্থাকে, যার জন্ম চুক্তি সইয়ের মাত্র ১২ দিন আগে।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন আইনজীবী এম এল শর্মা। সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, এই মামলা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভোটের আগে বিরোধীরা রাজনৈতিক অঙ্ক কষছে। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য মামলাটি খারিজ করেননি। তবে কেন্দ্রকে নোটিশও পাঠাননি। ৩১ অক্টোবর মামলার–পরবর্তী শুনানি।