বাংলাদেশ-ভারত চুক্তি: এলপিজিবাহী বাংলাদেশি ট্রাক ত্রিপুরা যাবে

ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে পণ্য সরবরাহ সহজ করে তুলতে বাংলাদেশ চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিতে চলেছে। এই বিষয়ে আগামীকাল বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই দেশের নৌসচিব পর্যায়ের বৈঠক। এই বৈঠক শুরুর আগেই ভারতের সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার থেকে এলপিজিবাহী বাংলাদেশি ট্রাককে ত্রিপুরার বিশালগড় বটলিং প্ল্যান্টে সরাসরি চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব নিষেধাজ্ঞা ছিল সেগুলো শিথিল করা হচ্ছে।

ভারতের জাহাজ পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তাঁর। মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া এবং বাংলাদেশি এলপিজিবাহী ট্রাককে ত্রিপুরায় যাওয়ার নিয়মাবলি শিথিল করা দুটির কৃতিত্বই তাঁর। মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের কথায়, বাংলাদেশ–ভারতের সম্পর্কের লেখমাত্রা যে উত্তরমুখী, এই দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাই তার প্রমাণ। বন্দর ব্যবহার ছাড়াও দুই দেশের মধ্যে অন্য বোঝাপড়া চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশের নৌপরিবহন সচিব আবদুস সামাদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লি এসে পৌঁছান। তিনি ১৮ জনের এক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চুক্তি সই হবে বৃহস্পতিবার।

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া গেলে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোয় ভারতীয় পণ্য সরবরাহ সহজতরই শুধু হবে না, পণ্যের খরচও কমে যাবে। এই চুক্তি হবে পাঁচ বছরের জন্য, যা মেয়াদ শেষে দুই দেশের সম্মতিতে বাড়ানো যাবে। তবে যেকোনো দেশ ছয় মাসের আগাম নোটিশ দিয়ে চুক্তি বাতিল বা স্থগিত রাখতে পারে। পর্যটনের প্রসারে দুই দেশের মধ্যে যাত্রী ও পর্যটকবাহী জাহাজ (ক্রুজ) চলাচলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমঝোতা বা বোঝাপড়া হবে। নৌপথে পণ্য চলাচলে সুবিধার জন্য একাধিক বন্দরকে যাতে ‘পোর্ট অব কল’ ঘোষণা করা যায়, সেই বোঝাপড়াও এই সফরে চূড়ান্ত হবে।

ত্রিপুরায় এলপিজিবাহী বাংলাদেশি ট্রাক ঢোকার বিষয়ে ভারতের যে নিয়মাবলি শিথিল হচ্ছে, তা চূড়ান্ত করতে ভারতের ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা হবে বাংলাদেশের নিবন্ধিত সংস্থার। ভারতে ঢোকার ক্ষেত্রে পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যেসব বিধি রয়েছে, চূড়ান্ত সমঝোতার পর সেগুলো অগ্রাহ্য করা হবে। এর ফলে হলদিয়া থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি পরিবহনে সময় ও খরচ যেমন কমে যাবে, তেমনি উপকৃত হবে বাংলাদেশের পরিবহনশিল্প।

মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশি ট্রাকচালকদের প্রয়োজনীয় নথি সীমান্তেই পরীক্ষা করা হবে। নথিতে কী কী থাকবে, তা দুই দেশ কথা বলে ঠিক করবে।