চীনের সাগর সেতুতে প্রথম যাত্রা

সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলো চীনের হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতু। ছবি: চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া
সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলো চীনের হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতু। ছবি: চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া

বিশ্বের দীর্ঘতম সাগর সেতুতে আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। চীনের এই সেতু দেশটির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে হংকং ও ম্যাকাওয়ের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। গতকাল মঙ্গলবার চীনের হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতু উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। আজ সর্বসাধারণের জন্য তা খুলে দেওয়া হয়।

আজ সকালে যাত্রী ও ভ্রমণকারীরা হংকংয়ের আন্তসীমান্ত বাস টার্মিনালে জড়ো হন। এ সময় বাস পরিচালকেরা তাঁদের বিভিন্ন ধরনের খাবার পরিবেশন করেন।

৫৮ বছর বয়সী অ্যাংগি চেং এসেছেন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকতে। ম্যাকাও যেতে বাসে উঠেছেন তিনি। বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমি বাসে চড়তে চাই আর দেখতে চাই, এটা কতটা সুবিধাজনক। বাইরের মনোরম দৃশ্যও উপভোগ করতে চাই আমি। হাজার হলেও এটি ঐতিহাসিক প্রকৌশল প্রকল্প।’

এই সেতু দিয়ে ম্যাকাও ও হংকংয়ের যাত্রী আর যানবাহনগুলো সরাসরি বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারবে। চীনের নদী পার্ল রিভারের ওপর দিয়ে সেতুটি সমুদ্র পার হয়ে চলে গেছে ওপারে। হংকং থেকে ম্যাকাওয়ে সড়কপথে যাতায়াতে তৈরি এ সেতু ৫৫ কিলোমিটার (৩৪ মাইল) দীর্ঘ। যাত্রাপথে সেতুটি আরও ১১টি বড় শহরকে যুক্ত করেছে। দক্ষিণ চীনের ৫৬ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ এ সেতুর সুবিধা পাবে। এ সেতু চালু হওয়ায় হংকং ও ম্যাকাওয়ের মধ্যে দূরত্ব আড়াই ঘণ্টা কমে এসেছে। আগের তিন ঘণ্টার পথ এখন আধা ঘণ্টায় যাতায়াত করা যাবে। এ ছাড়া ঝুহাই যেতে সময় লাগবে ৪৫ মিনিট, আগে যেখানে ৪ ঘণ্টা লাগত। হংকং থেকে ঝুহাই যেতে মাত্র ১০ হাজার ব্যক্তিগত গাড়িকে সেতু পারাপারের লাইসেন্স দেওয়া হবে। বাকিরা বাসে যাতায়াত করতে পারবেন। সেতুর দুই পাশে কাস্টমস পার হয়ে যেতে হবে পর্যটকদের।

সমর্থকেরা এই সেতুকে বিশ্বের প্রকৌশল খাতের বিজয় বলে আখ্যায়িত করলেও সমালোচনাও কম হচ্ছে না। সমালোচকেরা বলছেন, রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্যই এই ব্যয়বহুল ‘সাদা হাতি’ তৈরি হয়েছে। বেইজিংয়ের প্রচেষ্টা এর মাধ্যমে আধা স্বায়ত্তশাসিত হংকংকে মূলভূমিতে যুক্ত করা।