সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান শুধুই 'রাবার স্ট্যাম্প'!

অলোক ভার্মা ও রাকেশ আস্থানা। ফাইল ছবি
অলোক ভার্মা ও রাকেশ আস্থানা। ফাইল ছবি

ভারতের শীর্ষ তদন্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান এম নাগেশ্বর রাও কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। আজ শুক্রবার দেশটির সুপ্রিম কোট এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালত আদেশে আরও বলেছেন, সিবিআইয়ের বিশেষ পরিচালক রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গণহারে বদলি করার বিষয়টিও পরীক্ষা করে দেখা হবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের শুক্রবারের আদেশে স্রেফ রাবার স্ট্যাম্প পরিচালকে পরিণত হলেন এম নাগেশ্বর রাও। গত তিন দিন ধরে সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে কাজ করছেন তিনি। আদালত বলেছেন, সংস্থার কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না নাগেশ্বর। এমনকি কি কি সিদ্ধান্ত তিনি নিচ্ছেন, সেটির তালিকাও আদালতকে দিতে হবে। কেবল প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন নাগেশ্বর রাও।

সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মার করা পিটিশনের শুনানি করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার এসব সিদ্ধান্ত দেন। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মার বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে হবে। আর এই তদন্ত পর্যবেক্ষণ করবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। আগামী ১২ নভেম্বর এই পিটিশনের পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

গত মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে পুলিশি পাহারায় সিবিআই কেন্দ্রীয় দপ্তরে যান নাগেশ্বর রাও। ওই সময়ই অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ ছাড়া সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মা ও সংস্থাটির বিশেষ পরিচালক রাকেশ আস্থানাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় সরকার। এর পরদিনই আদালতের দ্বারস্থ হোন অলোক ভার্মা। মোদি সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতকে তিনি জানান, তদন্ত রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে না যাওয়াতেই আজ তাঁর এই দশা। সেই পিটিশনেরই শুনানি হলো শুক্রবার।

দুই সিবিআই শীর্ষ কর্তার মধ্যকার রেষারেষিতেই বর্তমান সংকটের উদ্ভব। ঘটনার কুশীলব দুই ব্যক্তি। একজন হলেন সিবিআইপ্রধান ও সংস্থাটির পরিচালক অলোক ভার্মা। অন্যজন হলেন সংস্থাটির বিশেষ পরিচালক রাকেশ আস্থানা। গত ১৫ অক্টোবর নিজেদের বড় কর্তা রাকেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে সিবিআই নিজেই। রাকেশ আস্থানাসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে বলা হয়, মাংস রপ্তানিকারক মইন কুরেশির বিরুদ্ধে থাকা মামলায় হস্তক্ষেপের বিনিময়ে আস্থানা ঘুষ নিয়েছেন। মইন কুরেশির বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে কলকাঠি নেড়েছেন অলোক ভার্মা। কারণ শুরু থেকেই রাকেশের বিরোধী ছিলেন তিনি।

অবশ্য এ ঘটনার আগেই অলোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন রাকেশ। আর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠনের পর আদালতে গিয়ে আগাম জামিন নেন রাকেশ আস্থানা। পরে দুই সিবিআই কর্তাকেই ছুটিতে পাঠায় মোদি সরকার।

আরও পড়ুন: