আসামে বাঙালিকে শেষ করার চক্রান্ত?

আসামে বাঙালি হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত
আসামে বাঙালি হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন। ছবি: সংগৃহীত

আসামে বাঙালি হত্যার দায় কার? এই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। পাশাপাশি বাঙালিদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর আক্রমণ অব্যাহত আছে। অভিযোগ—বাঙালিকে শেষ করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।

গত বৃহস্পতিবার আসামের তিনসুকিয়া জেলায় দুর্বৃত্তরা ছয় গ্রামবাসীকে ডেকে নিয়ে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করে। এক যুবক পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন।

ঘটনার পর সন্দেহভাজন ঝন্টু গগৈকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আসাম পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মুকেশ আগরওয়াল সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন উলফার স্বাধীন গোষ্ঠীই এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে।

উলফা এই ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে। তাই শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। কারণ, উলফা কোনো ঘটনা ঘটালে তার দায় স্বীকার করে।

সম্প্রতি গুয়াহাটিতে বোমা ফাটানোর পর উলফা সুপ্রিমো পরেশ বড়ুয়া নিজে ফোন করে অসমিয়া চ্যানেলকে ঘটনার দায় স্বীকার করে বাঙালিদের হুমকি দিয়েছিলেন।

তিনসুকিয়া জেলায় বাঙালি হত্যাকাণ্ডের সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছেন, দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে কঠোর সাজা দেবে তাঁর সরকার।

পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে বাঙালিদের ওপর আক্রমণের মাত্রা বেড়েই চলেছে। বাঙালির শান্তিপূর্ণ মিছিলে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। বিভিন্ন অসমিয়া সংগঠনের সমর্থকেরা এই হামলা চালায়।

বাঙালি–অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় গত শনিবার সর্বাত্মক বন্‌ধ্‌ পালিত হয়। অভিযোগ, বন্‌ধ্‌–সমর্থকদের ওপর বিনা প্ররোচনায় পুলিশ ও আধা সেনা জওয়ানেরা আক্রমণ চালিয়েছে। আক্রমণের হাত থেকে নারীরাও বাদ যাননি।

আসামের ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য নাগরিক সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির চেয়ারম্যান তপোধীর ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটাই হওয়ার ছিল। উইপোকা হলে তাকে তো মারতেই হবে!’

তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, ‘আফ্রিকায় বর্ণবিদ্বেষীরা কৃষ্ণাঙ্গদের সঙ্গে আরশোলার তুলনা করে তাদের শেষ করে দিতে চেয়েছিল। ভারতেও ফ্যাসিস্ট শক্তি বিজেপি বাঙালি জাতিকে আরশোলার সঙ্গে তুলনা করে একইভাবে তাদের ধ্বংস করে দিতে চাইছে।’

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তপোধীরের মতে, ‘এখনো ঘুমিয়ে থাকলে শুধু আসামে নয়, গোটা ভারতেই বাঙালি জাতির সামনে সর্বনাশ অবধারিত।’