আসিয়া বিবি ইস্যু: ইমরানের তীব্র সমালোচনায় জেমিমা

ইমরান খানের সাবেক স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথ। ছবি: টুইটার
ইমরান খানের সাবেক স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথ। ছবি: টুইটার

শোরগোল ফেলে দেওয়া আসিয়া বিবি ইস্যুতে মুখ খুললেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাবেক স্ত্রী জেমিমা গোল্ডস্মিথ। জেমিমা এ ঘটনায় ইমরান খানের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আসিয়া বিবির ব্যাপারে সরকার কট্টরপন্থীদের ফাঁদে পা দিয়েছে। এখন আর ইমরানের নয়া পাকিস্তানের স্বপ্ন নিয়ে আমাদের আর কোনো আশা নেই।’ 


ইমরানের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলেও ইমরানের বিভিন্ন কাজের প্রশংসা করেন জেমিমা। ইমরানের সমর্থনে কথা বলেছেন আগে। কঠিন সময়ে ইমরানের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু আসিয়া বিবির ঘটনায় তিনি ইমরানের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।

সরকার আসিয়া বিবি ইস্যুতে আন্দোলনরত তেহরিকে লাব্বাইক পাকিস্তানের (টিএলপি) সঙ্গে পাঁচ দফার ভিত্তিতে চুক্তি করেছে। সরকারের এমন চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় ইমরান খানের তীব্র সমালোচনা করেছেন জেমিমা গোল্ডস্মিথ। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘পিটিআই নেতৃত্বাধীন সরকার আসিয়া বিবির মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিয়ে কট্টরপন্থীদের দাবি মেনে নিয়ে তাদের গুহায় প্রবেশ করেছে। এখন আর নয়া পাকিস্তান নিয়ে আমাদের কোনো আশা নেই।’

পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি পাওয়া খ্রিষ্টান নারী আসিয়া বিবিকে খালাস দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার, আসিফ সাইদ খোসা ও মাজহার আলম খান মিয়ানখেল আসিয়া বিবির বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ম অবমাননার দায় থেকে তাঁকে রেহাই দেন। রায় ঘোষণার সময় পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসার বলেন, মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি ও দোষী সাব্যস্তকরণের বিরুদ্ধে আপিল গৃহীত হয়েছে।

আসিয়া বিবি ইস্যুতে জেমিমার টুইট। ছবি: টুইটার
আসিয়া বিবি ইস্যুতে জেমিমার টুইট। ছবি: টুইটার

২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন তিনি। এর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে নিম্ন আদালতে আসিয়া বিবিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়।

দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় ইথান ওয়ালি গ্রামের আসিয়া বিবিকে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে একই পাত্রের পানি খাওয়া নিয়ে তর্কাতর্কির সময় তিনি ধর্ম অবমাননা করেছেন বলে দুই মুসলিম নারী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে বিচারিক আদালতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়। চার বছর পর লাহোরের হাইকোর্ট সেই রায়কেই বহাল রেখেছিলেন।

সুপ্রিম কোর্ট আসিয়াকে বেকসুর খালাস দেওয়ার পর আন্দোলনে ফেটে পড়ে পাকিস্তান। রায় ঘোষণার পর শত শত মানুষ রাওয়ালপিন্ডি ও ইসলামাবাদে রাস্তা অবরোধ করেন। এতে নেতৃত্ব দেয় উগ্র ডানপন্থী তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি)। প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন সেনাপ্রধানের সঙ্গে। তারপর ইমরান খান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। কিন্তু এরপরও সারা দেশে অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে থাকে টিএলপি। অবশেষে সরকার টিএলপির সঙ্গে একটি চুক্তি করে। তাতে পাঁচটি দফা আছে। এ চুক্তির এক দিন পরই জেমিমা গোল্ডস্মিথ টুইট করে সরকারের ওই সমালোচনা করেন। এতে তিনি ইমরান খানের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেরও সমালোচনা করেন। তথ্যসূত্র: দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল