আসামে বাঙালি আন্দোলন, আজ গণমিছিল

পাঁচ দফা দাবিতে গণমিছিলের প্রচারপত্র। ছবি: প্রথম আলো
পাঁচ দফা দাবিতে গণমিছিলের প্রচারপত্র। ছবি: প্রথম আলো

বাঙালি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার দাবিতে ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচর শহরে গণমিছিল হবে আজ মঙ্গলবার। পাঁচ দফা দাবিতে আসাম রাজ্য নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতি (সিআরপিসিসি) এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। অন্যান্য সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে যৌথ আন্দোলন পরিচালন কমিটি।

দাবিগুলো হলো:
১. ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ১৫টি নথির যেকোনো একটিকে প্রমাণ হিসেবে সংযোজন করতে হবে।

২. জাতীয় নাগরিক নিবন্ধনের (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও সেগুলোর ১০ শতাংশ পুনরায় পরীক্ষা করার যে সিদ্ধান্ত, তা বাতিল করতে হবে।

৩. এনআরসিতে যাঁদের নাম নেই, তাঁদের আবেদন বিশেষ আদালত গঠন করে বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।

৪. ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা বা ডি ভোটার চিহ্নিতকরণ চলবে না। কেউ নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারলে তাঁকে বিশেষ জেলে নিক্ষেপের আইন প্রচলিত রয়েছে আসামে। এই বিশেষ কারাগার আসলে ডিটেনশন ক্যাম্প। বহু মানুষ সেই ডিটেনশন ক্যাম্পেই মারা যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে ভোটার তালিকায় কাউকে বিদেশি বলে সন্দেহ হলেই লাগিয়ে দেওয়া হয় ডি বা ডাউটফুল তকমা। এটি বাতিলের দাবি উঠেছে।

৫. কারও বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে শাস্তির বিধান রাখতে হবে।

চলতি বছরে এনআরসির কারণে আসামে বহু বাঙালি আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার আগে কারণও লিখে গেছেন অনেকে। তিনসুকিয়ায় পাঁচ বাঙালিকে তুলে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। পুলিশ এখনো হত্যার কারণই অনুসন্ধান করতে পারেনি।

যৌথ আন্দোলন পরিচালন কমিটির সভাপতি তপোধীর ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে জানান, ভারতে চলছে উইপোকা নিধনের ষড়যন্ত্র। ফ্যাসিস্ট শক্তি বাঙালি জাতিকেই ধ্বংস করতে উদ্যত।

আসামের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ভারতীয় নাগরিকদের এনআরসি তালিকায় নাম তুলতে হবে। হিন্দু বা মুসলিম বিচার করা চলবে না।

আন্দোলনের পাশাপাশি আসামে চলছে এনআরসির সংযোজন ও অভিযোগ গ্রহণ প্রক্রিয়া। এখন পর্যন্ত তিন লাখ আবেদন জমা পড়েছে। আপত্তি জমা পড়েছে মোট ৮০টি। গত ২৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে এই প্রক্রিয়া। তবে ১ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট ১৫টি নথিকেই বৈধতা দিয়ে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রক্রিয়া জারি রাখতে বলেছেন।

আসামে এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া তালিকায় ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম বাদ পড়ে। রাজ্যের ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ জন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৭ জনের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। বাদ পড়া মানুষের বেশির ভাগই বাঙালি।