খাসোগিকে 'চুপ করানোর' নির্দেশ দেন যুবরাজ

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ছবি: এএফপি
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। ছবি: এএফপি

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে ‘চুপ করানো’র নির্দেশ দিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তুরস্কের একটি সংবাদপত্র এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করেছে। বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিআইএ তুরস্কের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এমন তথ্য দিয়েছে। অবশ্য তুর্কি কর্মকর্তারা এ খবর অস্বীকার করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের সংবাদপত্র ‘হুরিয়েত’ এমন খবর প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে-গত মাসে সিআইএ-এর পরিচালক জিনা হাসপেল তুর্কি কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত কথোপকথনের একটি রেকর্ড তাঁদের কাছে আছে। কথোপকথনের ওই রেকর্ডে শোনা গেছে, জামাল খাসোগিকে চুপ করানোর নির্দেশ দিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। অবশ্য একজন তুর্কি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এমন কোনো রেকর্ডের তথ্য তাঁদের কাছে নেই। অন্যদিকে সৌদি আরব বরাবরই বলে আসছে, খাসোগিকে হত্যার বিষয়ে আগ থেকে কিছুই জানতেন না যুবরাজ বিন সালমান।

হুরিয়েত পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে সাংবাদিক আবদুলকাদির সেলভি লিখেছেন, ‘কথোপকথনের একটি রেকর্ড আলোচনায় আছে।’ তাঁর দাবি, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও তাঁর ভাইয়ের মধ্যে এই কথোপকথন হয়েছিল। আবদুলকাদির সেলভি আরও লিখেছেন, ‘বলা হচ্ছে, তুরস্কে সফরের সময় সিআইএ প্রধান জিনা হাসপেল এই বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। যুবরাজ বিন সালমান যত দ্রুত সম্ভব খাসোগিকে নিশ্চুপ করাতে বলেছিলেন।’

ওয়াশিংটন পোস্টে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে একের পর এক কলাম লিখে শাসকদের রোষানলে পড়েন জামাল খাসোগি। পরে তিনি দেশ ছেড়ে স্বেচ্ছানির্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে গত ২ অক্টোবর ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে ঢোকার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সৌদির খ্যাতনামা সাংবাদিক খাসোগি। শুরু থেকে তুরস্ক দাবি করে আসছে, খাসোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতর সৌদি চরেরা হত্যা করেছে।

অভিযোগ উঠেছে, যুবরাজের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এ হত্যা সংঘটিত হয়েছে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সৌদি আরব স্বীকার করে, খাসোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হত্যা করা হয়েছে। তবে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে স্বীকার করলেও এতে রাজপরিবার জড়িত নয় বলে দাবি করছে সৌদি আরব। এখন পর্যন্ত খাসোগির মৃতদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সৌদি আরবও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি। অন্যদিকে খাসোগি হত্যায় যুবরাজ সালমানের ভূমিকা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।