যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি চায় সৌদি

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: এএফপি
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: এএফপি

সাংবাদিক জামাল খাসোগি খুনের সঙ্গে সৌদি যুবরাজের সম্পর্কের বিষয়টি তদন্তের আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা আরেকটি রহস্যের কিনারা করতে ব্যস্ত ছিল। সৌদি যুবরাজ কি পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন? নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৮০ বিলিয়ন বা ৮ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তির জন্য দৌড়ঝাঁপ করছিলেন যুবরাজ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পারমাণবিক স্থাপনার নকশা কিনতে চাইছিলেন।

এ চুক্তির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত সৌদি ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, সৌদি যেখানে কম খরচে বাইরে থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কিনতে পারে, সেখানে নিজস্ব জ্বালানি উৎপাদনে যাওয়ার রহস্য কী? ওয়াশিংটন উদ্বেগে পড়ে ভাবতে থাকে, যুবরাজের অন্য কোনো মতলব আছে কি না। নিজস্ব পারমাণবিক স্থাপনায় অস্ত্র তৈরি করতে পারে সৌদি—এ সংশয়ে পড়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তিতে সই করার আগে ইরান এটাই করেছিল।

চুক্তির বিষয়ে কথাবার্তা এগোনোর মধ্যেই যুবরাজ মোহাম্মদ ঘোষণা দেন, ‘ইরান যদি পারমাণবিক বোমা তৈরি করে, আমরাও তাদের পথেই হাঁটব।’ ইরানকে চরম শত্রু হিসেবেই দেখে সৌদি। ট্রাম্প প্রশাসনকে বোঝানো হয়, পারমাণবিক চুল্লি তৈরি করা হলে জাতিসংঘের কোনো পর্যবেক্ষককে তা দেখাতে সম্মত হবে না সৌদি। এ থেকে সন্দেহ আরও বেড়ে যায়।

সৌদির সঙ্গে গোপন চুক্তি নিয়ে গত মার্চ মাসে কংগ্রেসে প্রশ্ন করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানিমন্ত্রী রিক পেরি তা কৌশলে এড়িয়ে যান। সৌদির সঙ্গে ওই চুক্তির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও পরিষ্কারভাবে কিছু বলছে না ট্রাম্প প্রশাসন।

এখন খাসোগি হত্যার পর পারমাণবিক জ্বালানি ও প্রযুক্তি দিয়ে সৌদি যুবরাজকে কতটা বিশ্বাস করা যায়, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ ধরনের জ্বালানি সামরিক কাজে ব্যবহার করার আশঙ্কা থেকেই যায়।

তবে যুক্তরাষ্ট্র কি সৌদির কাছে এই প্রযুক্তি বিক্রি করবে না? যুক্তরাষ্ট্রের কাছে না পেলে সৌদি তখন রাশিয়া, চীন বা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে যেতে পারে।

সৌদির জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে বারবার নিশ্চিত করে বলা হয়েছে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বেসামরিক ও শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যায়। আর্থসামাজিক উন্নয়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্যকে সব ধরনের পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।