সৌদি যুবরাজের বন্ধুর বাড়িতে লাশের জন্য তল্লাশি

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির লাশের সন্ধানে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের এক বন্ধুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে তুরস্কের পুলিশ। এ কাজে ব্যবহার করা হয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ও ড্রোন।

আজ মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, তুরস্কের সংবাদপত্র ‘হুরিয়েত’ জানিয়েছে গতকাল সোমবার দেশটির উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় ইয়ালোভা প্রদেশে সৌদি এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ও বাড়িসংলগ্ন ভিলায় তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। ক্রাইম সিন ইনভেস্টিগেটরেরা ভিলার বাগানের তিনটি কূপেও লাশের সন্ধান করেন। যুবরাজের ওই বন্ধুর নাম মোহাম্মদ আহমেদ আল-ফাওজান। তিনি এই জমি কিনে ২০১৪ সালে বাড়ি ও ভিলা নির্মাণ করেন।

হুরিয়েতের প্রতিবেদনে ফাওজানকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পত্রিকার ওয়েবসাইটে শেয়ার করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ভিলার দেয়ালে সৌদি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিশাল ছবি টাঙানো।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তুরস্কের সরকারি কৌঁসুলি গতকাল সোমবার বলেছেন, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন একজন মানসুর ওসমান এম আবু হুসেইন সাংবাদিক খাসোগি হত্যার আগের দিন ফাওজানের সঙ্গে কথা ফোনে কথা বলেছেন। ওই সময় ফাওজান তুরস্কে ছিলেন না। তবে এই ফোনের সূত্র ধরে খাসোগির লাশের সন্ধান মিলতে পারে।

ওয়াশিংটন পোস্টে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে কলাম লিখে শাসকদের রোষানলে পড়েন জামাল খাসোগি। পরে তিনি স্বেচ্ছা–নির্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে গত ২ অক্টোবর ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে ঢোকার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন খাসোগি। শুরু থেকে তুরস্ক দাবি করে আসছে, খাসোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতর সৌদি চরেরা হত্যা করেছে।

অভিযোগ উঠেছে, যুবরাজের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এ হত্যা সংঘটিত হয়েছে। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সৌদি আরব স্বীকার করে, খাসোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হত্যা করা হয়েছে। তবে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে স্বীকার করলেও এতে রাজপরিবার জড়িত নয় বলে দাবি করছে সৌদি আরব। এখন পর্যন্ত খাসোগির মৃতদেহের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। সৌদি আরবও এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি। অন্যদিকে খাসোগি হত্যায় যুবরাজ সালমানের ভূমিকা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।