ভোট বাগাতে নতুন কৌশল বিজেপির

নরেন্দ্র মোদি
নরেন্দ্র মোদি

ভারতের আগামী লোকসভা নির্বাচনে উদ্বাস্তুদের ভোট নিশ্চিত করতে এবার মোদি সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে নতুন করে সংশোধনী আনছে। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, দেশের উদ্বাস্তু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। পাশাপাশি যেসব সংখ্যালঘু উদ্বাস্তু ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী রয়েছেন, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে।

গত সোমবার নাগরিকত্ব বিল নিয়ে দিল্লিতে যৌথ সংশোধনী কমিটির এক বৈঠক শেষে এই সংশোধনী আনার কথা বলেছেন কমিটির সদস্য বিজেপির সাংসদ মীনাক্ষী লেখি। তিনি বলেছেন, বাঙালি, বিশেষ করে হিন্দু উদ্বাস্তুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই সংশোধনী আনা হচ্ছে। বৈঠকে এই সংশোধনী আনার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এই সংশোধনী পাস হলে আসামে চলতি জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) প্রক্রিয়ায় নাম বাদ পড়া বাঙালি হিন্দুদের সমস্যা মিটে যাবে। কারণ, এনআরসিতে যাঁদের নাম ওঠেনি বা পর্যাপ্ত নথি দিয়ে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে আর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। আসামে এনআরসি তালিকায় তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাবে। পাশাপাশি যেসব বাঙালিকে আসামের ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী রাখা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হবে।

যৌথ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান রাজেন্দ্র আগরওয়াল ৭ জানুয়ারি লোকসভায় এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করবেন। বিলে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, পার্শি ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের যাঁরা ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। আর সংখ্যালঘু উদ্বাস্তুদের ‘বিদেশি’ তকমা দিয়ে ক্যাম্পে বন্দী রাখা যাবে না। পাশাপাশি এখন যেসব সংখ্যালঘু হিন্দু ডিটেনশন ক্যাম্পে রয়েছেন, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হবে। ৭ জানুয়ারি লোকসভায় এই সংশোধনী পেশ করার কথা থাকলেও চলতি শীতকালীন অধিবেশনে এই বিল পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, ৮ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন।

এদিকে ৪ জানুয়ারি আসামের শিলচর থেকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করার কথা প্রধানমন্ত্রী মোদির। সেই নির্বাচনী প্রচার সভায় মোদি নাগরিকত্ব বিল নিয়ে কোনো কথা বলবেন কি না, সেদিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ। যদিও ২০১৪ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনের সময় মোদি ঘোষণা দিয়েছিলেন উদ্বাস্তুদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে নাগরিকত্বের স্বাদ পায়নি উদ্বাস্তুরা।