নারীদের ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন

ভারতের কেরালার নারীরা গতকাল মঙ্গলবার ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। এতে যোগ দিয়েছেন রাজ্যের লাখ লাখ নারী। লিঙ্গবৈষম্যের প্রতিবাদে এবং শবরীমালা মন্দির নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মান্য করার দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটায় উত্তর কেরালার কাসারগড় থেকে দক্ষিণ কেরালার তিরুবনন্তপুরম পর্যন্ত লম্বা এই মানববন্ধনে অংশ নেন রাজ্যের লাখ লাখ নারী। এই মানববন্ধনে সায় ছিল রাজ্যের বামদলীয় সরকারের। এতে অংশ নেয় রাজ্যের ১৭৬টি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। একই দিন এই মানববন্ধনকে সমর্থন জানিয়ে কোঝিকোড়ের মুথালাকুলামে সমান্তরাল আরেকটি ‘সৌভ্রাতৃত্ব বন্ধন’ তৈরি করেন কেরালার পুরুষ সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক জগতের বিশিষ্টজনেরা।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট কেরালার ঐতিহ্যবাহী শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতী নারীদের প্রবেশাধিকার দিলে এ নিয়ে বিক্ষোভ ছড়ায় কেরালার বিভিন্ন এলাকায়। লিঙ্গবৈষম্যের প্রতিবাদে এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় পালন করতে এই মানবপ্রাচীর তৈরি করেন রাজ্যের নারীরা।

গতকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের চেষ্টা সত্ত্বেও শবরীমালার আয়াপ্পা মন্দিরে ঢুকতে পারেননি ঋতুমতী নারীরা। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন কর্মসূচি। আন্দোলনকারীরা বলছেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কেরালা সমৃদ্ধ ঐতিহ্য বহন করে। তবে এখন কেরালার নারীদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে মধ্যযুগীয় অন্ধকারে। এর প্রতিবাদেই এই মানববন্ধন।

তবে মানববন্ধন করতে গিয়ে যাতে কোনো যানজটের সৃষ্টি না হয়, সেই লক্ষ্যে গতকাল দুপুর থেকে ইডুকি, কোঝিকোড়, কান্নুর, তিরুবনন্তপুরমসহ বিভিন্ন জেলার স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়। মানববন্ধনে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাতসহ অন্য নেতারাও। এদিকে এই মানববন্ধনের প্রতিবাদ করেছে কেরালায় বিজেপির নারী মোর্চার সভাপতি কেটি রেমা। তিনি বলেন, এই মানববন্ধন সফল হলেও লিঙ্গবৈষম্যের ইস্যু এখানে প্রাধান্য পায়নি। বরং এটাকে মনে হয়েছে সিপিএমের সমাবেশ।