প্রখ্যাত সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিত চলে গেলেন

দিব্যেন্দু পালিত
দিব্যেন্দু পালিত

প্রখ্যাত সাহিত্যিক দিব্যেন্দু পালিত আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি প্রয়াত হন। গতকাল বুধবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

১৯৩৯ সালের ৫ মার্চ বিহারের ভাগলপুরে দিব্যেন্দু পালিতের জন্ম। স্কুল-কলেজের পাঠ সেখানেই।

বাবার মৃত্যুর পর ভাগলপুর থেকে স্নাতক পাস করে জীবন ও জীবিকার সন্ধানে চলে আসেন কলকাতায়। বাঁচার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। না খেয়ে শিয়ালদহ স্টেশনে রাতও কাটিয়েছেন। কিন্তু লেখালেখি ছাড়েননি। কলকাতায় এসে তিনি তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে ১৯৬১ সালে এমএ পাস করেন। কর্মজীবনও শুরু হয় এই ১৯৬১ সাল থেকে।

দিব্যেন্দু পালিত প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন কলকাতার ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় সহসম্পাদক হিসেবে। পরবর্তী সময় তিনি যোগ দেন বিজ্ঞাপন সংস্থায়। কাজ করেন ক্লারিয়ন ম্যাকান অ্যাডভারটাইজিং সংস্থাসহ আনন্দবাজার ও স্টেটসম্যানে। পরে তিনি কাজ করেন আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে।

ভাগলপুর কলেজে পড়াশোনার সময় থেকে দিব্যেন্দু পালিত লেখালেখি শুরু করেন। তাঁর প্রথম গল্প ‘ছন্দপতন’ প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয় ক্রোড়পত্রে ১৯৫৫ সালের ৩০ জানুয়ারি। দিব্যেন্দু পালিতের তখন বয়স ছিল ১৬ বছর। ১৯৫৬ সালে দেশ পত্রিকায় ছাপা হয় গল্প ‘নিয়ম’। ২০ বছর বয়সে প্রথম উপন্যাস ‘সিন্ধু বারোয়াঁ’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৯ সালে।

একজন ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, কবি, প্রাবন্ধিক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন দিব্যেন্দু পালিত। পাশাপাশি তিনি হয়ে ওঠেন একজন সাংবাদিকও। দিব্যেন্দু পালিতের লেখা গল্প-উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘ঘরবাড়ি’, ‘সোনালী জীবন’, ‘ঢেউ’, ‘সহযোদ্ধা’, ‘আমরা’, ‘অনুভব’, ‘জেটল্যাগ’, ‘গাভাসকার’, ‘হিন্দু’, ‘জাতীয় পতাকা’, ‘ত্রাতা’, ‘ব্রাজিল’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

১৯৮৪ সালে তিনি পেয়েছিলেন আনন্দ পুরস্কার। এ ছাড়া পেয়েছেন সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার ও সম্মান। তাঁর লেখা ইংরেজিসহ ভারতের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর লেখা নিয়ে চলচ্চিত্র হয়েছে। হয়েছে রেডিও, টেলিভিশনে নাটকও ।