ভবঘুরে গরু-ছাগলের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র

জনসংখ্যার দিক থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশ। এই রাজ্যের শাসনক্ষমতায় এখন বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর যোগী আদিত্যনাথ এই রাজ্যের বহু ঐতিহাসিক স্থানের নাম বদলে দিয়েছেন। ওই রাজ্যে গো-হত্যা, গো-ব্যবসা বন্ধ করেছেন। রক্ষা করছেন গরু। তিনি এবার রাজ্যজুড়ে ভবঘুরে গরু-ছাগলের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।

মূলত উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন এলাকার চাষিরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, ভবঘুরে গরু-ছাগলের অত্যাচারে তাঁরা অতিষ্ঠ। এসব গরু-ছাগল নষ্ট করে দিচ্ছে খেতের ফসল। তাই চাষিদের কথা মাথায় রেখে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবার গরু-ছাগলের পুনর্বাসনের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে ভবঘুরে গরু-ছাগল আর কৃষকের খেতের ফসল নষ্ট করতে না পারে। এই আশ্রয়কেন্দ্র গড়ার জন্য সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে। আশ্রয়কেন্দ্র চালানোর জন্য রাজ্য সরকার বড় ব্যবসায়ীদের ওপর ২ শতাংশ ‘গো-কল্যাণ সেস’ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিভিন্ন লাভজনক সংস্থা ও বাজার কমিটির আয়ের ওপর এই কর ধার্য করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গত বুধবার রাতে রাজ্যের সব জেলা শাসকদের এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছেন, ১০ জানুয়ারির মধ্যে রাজ্যের সব ভবঘুরে গরু-ছাগলকে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। রাজ্যের কৃষক ও সাধারণ মানুষ যাতে ভবঘুরে গরু-ছাগল নিয়ে কোনো সমস্যায় না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেছেন, যাঁরা বাড়ির পোষা গরু-ছাগল রাস্তায় ছেড়ে দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরিমানা করা হবে মোটা টাকা। এই আশ্রয়কেন্দ্র চালানোর জন্য রাজ্যের জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সাহায্য নেওয়া হবে।

ভবঘুরে গরু-ছাগলের ফসল নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে বেশ কিছুদিন ধরে আলিগড় ও ফৈজাবাদ জেলার কয়েকটি গ্রামের চাষিরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এ সময় তাঁরা এলাকার বেশ কিছু ভবঘুরে গরু-ছাগল ধরে এনে স্কুলে তালা দিয়ে রাখেন। তাঁরা ঘোষণা দেন, এ নিয়ে রাজ্য সরকারের ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা ওই গরু-ছাগল আটকে রাখবেন। এ খবর পৌঁছার পর মুখ্যমন্ত্রী ভবঘুরে গরু-ছাগলের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দেন।