মোদিকে নিয়ে প্রশ্ন এখন বিজেপিতেই

নরেন্দ্র মোদি ও নিতীন গড়কড়ি
নরেন্দ্র মোদি ও নিতীন গড়কড়ি

বিজেপির সময় ভালো যাচ্ছে না। সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির চরম পরাজয়ের পর দলের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। বিজেপি টের পেয়ে গেছে যে তাদের জনপ্রিয়তা কমছে।

পাঁচ রাজ্যের মধ্যে তিনটি বড় রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। এবার সেখানকার হাল ধরেছে কংগ্রেস।

বিজেপির শরিক দলের নেতারাও মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাওয়া এখন স্তিমিত হয়ে আসছে। মানুষ মোদির ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে।

বিজেপি ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের মতো ফের ঝড় তুলে ক্ষমতায় যেতে পারবে কি না, তা নিয়ে খোদ দলের অন্দরেই বিতর্ক আছে। ফলে, এখন যে হাওয়া বইছে, তাতে বিজেপির ফের ক্ষমতায় যাওয়া কঠিনই হবে।

ভারতের সংবাদমাধ্যম বলছে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক শিবসেনা আগেভাগেই ঘোষণা দিয়েছে, তারা আর বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে লোকসভা নির্বাচনে লড়বে না। শিবসেনা এককভাবে লড়বে।

শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’র কার্যনির্বাহী সম্পাদক সঞ্জয় রাউত বলেছেন, এবার বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর মুখ বদলাক।

সঞ্জয় রাউতের কথা, এবারের নির্বাচনে যদি বিজেপি এককভাবে বা এনডিএ এককভাবে সরকার গড়ার প্রয়োজনীয় আসন না পায় এবং পার্লামেন্ট যদি ত্রিশঙ্কু হয়ে পড়ে, সে ক্ষেত্রে বিজেপি নেতা ও বিজেপির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নিতীন গড়কড়ির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ আসতে পারে। কারণ, বিজেপিতে তিনি এখনো একজন আদর্শ নেতা। তাঁর সঙ্গে বিজেপির চালিকা শক্তি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের (আরএসএস) ভালো সম্পর্কও রয়েছে। এ ছাড়া তিনি এখন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। তাই শিবসেনা মনে করে, মোদির পর যোগ্য প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন নিতীন গড়কড়ি।

সঞ্জয় রাউত এমন কথাও বলেছেন, এ বছরের লোকসভা নির্বাচনে যদি ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতি হয়, সে জন্য দায়ী থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মোদিই।

সঞ্জয় রাউতের অভিযোগ, ২০১৪ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কিন্তু বিজেপি সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, দিন দিন বিজেপির জনপ্রিয়তা কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিতীন গড়কড়ির প্রধানমন্ত্রীর পদে বসার সম্ভাবনা তৈরি হবে। কারণ, আরএসএস রামমন্দির নির্মাণের জন্য আইন করার পরামর্শ দিলেও মোদি সেই পথে না হেঁটে আদালতের রায়ের আশায় দিন গুনছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছে আরএসএস। এ কারণে মোদির ওপর এখন আস্থা হারাতে বসেছে তাঁরই শরিকেরা।

নিতীন গড়কড়িও বলেছেন, পাঁচ রাজ্যে পরাজয়ের ভার নিতে হবে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিকে।

যদিও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তাঁর ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের নেতৃত্বের ওপর।

আবার উত্তর প্রদেশের বিজেপি নেতা ও আরএসএস ঘনিষ্ঠ গৌতম দাবি করেছেন, যোগী আদিত্যনাথকে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। তাঁর স্থলে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী করা হোক রাজনাথ সিংকে। আর ভারতের উপপ্রধানমন্ত্রী করা হোক নিতীন গড়কড়িকে।

অন্দর মহলের খবর, প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে নিতীন গড়কড়ির সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও।