আইনস্টাইনের তত্ত্ব অস্বীকার ভারতীয় বিজ্ঞানীদের!

আলবার্ট আইনস্টাইন
আলবার্ট আইনস্টাইন
>
  • নিউটন ও আইনস্টাইনের আবিষ্কারকে ভুল বলে দাবি
  • হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি ও ধর্মীয় বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার
  • মাধ্যাকর্ষণ শক্তির নতুন নাম হওয়া উচিত ‘নরেন্দ্র মোদি তরঙ্গ’

ভারতের বিজ্ঞানীরা এক সম্মেলনে আইনস্টাইনের তত্ত্ব অস্বীকার করলেন। সম্মেলনে বক্তারা উদ্ভট সব দাবি করেন। পাঞ্জাবের জলন্ধরে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের সম্মেলনে এই দাবি করা হয়। ৩ জানুয়ারি এটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল সোমবার তা শেষ হয়েছে।

এই সম্মেলনে কোনো কোনো অংশগ্রহণকারী আইজ্যাক নিউটন ও আলবার্ট আইনস্টাইনের আবিষ্কারকে ভুল বলে দাবি করেছেন। এর বিপরীতে তাঁরা হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি ও ধর্মীয় বিষয়গুলোকে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছেন।

সম্মেলনে দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জি নাগেশ্বর রাও দাবি করেন, হাজার হাজার বছর আগেই ভারতে ‘স্টেম সেল’ নিয়ে গবেষণা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, একটি হিন্দুধর্মীয় বইয়ে তিনি তা দেখেছন। জি নাগেশ্বর রাও বলেন, রামায়ণের প্রধান চরিত্র রাবণের ২৪ ধরনের বিমান ছিল এবং বর্তমান শ্রীলঙ্কায় তার অনেকগুলো অবতরণক্ষেত্র ছিল।

এই সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় তামিলনাড়ু থেকে আসা আরেক বিজ্ঞানী ড. কে জি কৃষ্ণান বলেন, আইজ্যাক নিউটন ও আলবার্ট আইনস্টাইন দুজনেই ভুল ছিলেন এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির নতুন নাম হওয়া উচিত ‘নরেন্দ্র মোদি তরঙ্গ’।

অবশ্য সম্মেলনে ইন্ডিয়ান সায়েন্টিফিক কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ ধরনের উদ্ভট মন্তব্যে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এ ধরনের মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক।’

আবার অনেক ভারতীয় বিজ্ঞানী ও সমালোচক বলেছেন, হিন্দু পুরাণের গল্পগুলো আসলে উপভোগ করার জন্য। সেগুলোকে বিজ্ঞান হিসেবে দাবি করা মূর্খতা।

এর আগে গত বছর ভারতের শিক্ষাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সত্যপাল সিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ক এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন যে রামায়ণে বিমানের কথা প্রথম উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি আরও দাবি করেন, রাইট ভ্রাতৃদ্বয়ের আট বছর আগেই শিভাকার বাপুজি টালপাড়ে নামে একজন ভারতীয় বিমান আবিষ্কার করেন।

এর আগে ২০১৪ সালে মুম্বাইয়ে এক হাসপাতালের কর্মচারীদের প্রতি ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন যে হিন্দু দেবতা গণেশ, যার দেহ মানুষের কিন্তু মাথা হাতির, প্রমাণ করে যে প্রাচীন ভারতে কসমেটিক সার্জারির প্রচলন ছিল।