ইরান থেকে ৮ লাখ আফগানকে তাড়ানো হলো

ইরান থেকে রেকর্ডসংখ্যক আফগানকে জোর করে দেশে পাঠানো হয়েছে। ছবি: রয়টার্স
ইরান থেকে রেকর্ডসংখ্যক আফগানকে জোর করে দেশে পাঠানো হয়েছে। ছবি: রয়টার্স

ইরান থেকে রেকর্ডসংখ্যক আফগানকে বিতাড়িত করা হয়েছে। গত বছর প্রায় আট লাখ আফগানকে জোর করে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার গ্যাঁড়াকলে পড়ে ইরানের অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে দেশটি আফগানদের তাড়িয়ে দিতে শুরু করে।

আফগানিস্তানে নিযুক্ত আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রধান লরেন্স হার্ট বলেন, ২০১৭ সালের তুলনায় ৬৬ শতাংশ বেশি আফগানকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ধারা চলতে থাকবে।

২০১২ সাল থেকে আফগানিস্তানের জনগণের ফিরে আসার বিষয়ে তথ্য রাখছে আইওএম। এর মধ্যে ২০১৮ সালের সংখ্যা সর্বোচ্চ। পাকিস্তান থেকে ৩৩ হাজার আফগান ফিরে এসেছে।

কয়েক বছর ধরে আফগানরা অর্থের বিনিময়ে পাচারকারীদের সাহায্যে সীমান্ত পার হয়ে কাজের খোঁজে ইরানে যাচ্ছিল। পাচারকারীরা একেকজন আফগানের জন্য পাচারকারীদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ ডলার নিত।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ১৫ থেকে ২০ লাখ অনিবন্ধিত আফগান ইরানে রয়েছে। আরও ১০ লাখ আফগান নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে রয়েছে।

চার বছর ধরে ইরানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন মোহাম্মদ সারওয়ার (৩৯)। ইরানের পুলিশ তাঁকে আটক করে ফেরত পাঠিয়েছে। আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের এলাকা হেরাতে আইওএমের আশ্রয়শিবিরে রয়েছেন সারওয়ার। তিনি বলেন, ‘যদি আমি আফগানিস্তানে উপার্জন করতে পারতাম, তাহলে কখনো ইরানে কাজের জন্য যেতাম না।’

আবদুল হাকিম (২৮) এক মাস ধরে চেষ্টা চালানোর পর ইরানে কাজ পেয়েছিলেন। কিন্তু এরপরই তাঁকে আটক করে ফেরত পাঠানো হয়। স্ত্রী ও তিন সন্তানের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার। হাকিম বলেন, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি খুব খারাপ।

নাসেরউদ্দিনের (৭৫) অবস্থাও একই রকম। বললেন, পাঁচ মাস ধরে তিনি ইরানে ছিলেন। পুলিশ তাঁকে আটক করে ফেরত পাঠিয়েছে। আফগানিস্তানে শূন্য হাতে তিনি ফিরে এসেছেন।

গত বছর ডলারের বিপরীতে ইরানের মুদ্রা রিয়ালের মান অর্ধেকে নেমেছে। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরে আসার পর ইরানে কঠোর নিষেধাজ্ঞা বহাল হয়। এতে ইরান অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে।