সিবিআই প্রধানের পদে ফিরলেন অলোক, দায়িত্বে নয়

অলোক ভার্মা
অলোক ভার্মা

সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) মহাপরিচালক অলোক ভার্মাকে তাঁর পদ ফিরিয়ে দিলেন সর্বোচ্চ আদালত। তবে আপাতত তিনি কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তিনি স্বপদে বহাল থাকবেন কি না, কিংবা থাকলেও তাঁর অবস্থান কী হবে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওই কমিটিতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী নেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।

সিবিআই মহাপরিচালক অলোক ভার্মার সঙ্গে সংস্থার বিশেষ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার বিবাদ চরমে উঠেছিল। একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন। আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়েছিল। অবস্থা সামাল দিতে ২৩ অক্টোবর গভীর রাতে সরকার দুই কর্তাকেই ছুটিতে পাঠিয়ে দেয়। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন অলোক ভার্মা। তাঁর দাবি ছিল, দুই বছরের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে গেলে তা নিতে হতো নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডেকে। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। অতএব সরকারি নির্দেশ আইনবিরুদ্ধ। সর্বোচ্চ আদালত ওই মামলার রায় দিতে গিয়ে মঙ্গলবার বলেন, ওই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট, মহাপরিচালককে অপদস্থ করার চেষ্টা হয়েছিল।

সিবিআইয়ের মহাপরিচালক ও বিশেষ পরিচালকের মধ্যে এ ধরনের সংঘাত সংস্থার ইতিহাসে এই প্রথম। রাকেশ আস্থানা গুজরাট ক্যাডার অফিসার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ। জানুয়ারি মাসে অলোক ভার্মার মেয়াদ শেষ হলে আস্থানাকেই সিবিআইয়ের মহাপরিচালক করার কথা সরকার ভেবে রেখেছিল।

সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সরকারের কাছে ধাক্কা বলে অবশ্য মনে করছেন না অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। মঙ্গলবার রায়ের পর তিনি বলেন, সংস্থার দুই শীর্ষ কর্তার সংঘাতের সামাল দিতে ওই সময় ওটাই সেরা উপায় বলে সরকার মনে করেছিল। ভিজিল্যান্স কমিশনের সুপারিশ মেনেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জেটলি বলেন, এখন সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছেন সেই অনুযায়ী সরকার ব্যবস্থা নেবে।

এই রায় থেকে সরকারের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খারগে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও জম্মু–কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।

তবে এই রায়কে হাতিয়ার করে ফের সরব হয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার তিনি বলেন, অলোক ভার্মাকে রাত একটায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কারণ তিনি রাফাল কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিতে যাচ্ছিলেন। মঙ্গলবারও রাহুল বলেন, রাফালের হাত থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। দেশবাসী একদিন সত্য জানতে পারবে।