নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে কাল আসামে আবার বন্ধ্

আসামে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
আসামে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

ভারতীয় নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আসামে আগামী কাল শুক্রবার আবার বন্‌ধ্‌ ডেকেছে নৃতাত্ত্বিক সংগঠনগুলোর যৌথ মঞ্চ। তারা অবিলম্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৬ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

আসামে হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার উদ্যোগের বিরোধিতা করে আন্দোলন চলছেই। গত মঙ্গলবার এ নিয়ে বন্‌ধ্‌ চলেছে। এরপর একই ইস্যুতে কাল বন্‌ধ্‌ ডাকা হলো। আসামের বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ, বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে।

গত মঙ্গলবার ভারতীয় জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় প্রবল বিরোধিতার মধ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কণ্ঠভোটে পাস হয়। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বাদে প্রায় সব দলই বিলটির বিরোধিতা করে। সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় গতকাল বুধবার বিলটি পাস হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য এক দিন সভার মেয়াদও বাড়ানো হয়। কিন্তু দিনভর আলোচনার পর আর্থিকভাবে দুর্বলদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণের জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হয়। নাগরিকত্ব বিলটি গৃহীত হয়নি।

বিজেপি বলছে, ৩১ জানুয়ারি বাজেট শুরু হলে সরকার বিলটি পাস করার জন্য উদ্যোগ নেবে। রাজ্যসভায় বিজেপি এমনিতেই সংখ্যালঘু। শরিকেরাও বিলটির বিরোধী। তাই পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ২৪৫ সদস্যের রাজ্যসভায় বিজেপির নিজস্ব সদস্যের সংখ্যা ৭৩। তবে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএর এখনো ৮৮ জন সদস্য আছেন রাজ্যসভায়।

কংগ্রেসের নিজের সদস্য ৫০ হলেও ইউপিএর সদস্যসংখ্যা ৫৭। এর সঙ্গে বিজেপিবিরোধী তৃণমূল, সিপিএম, আরজেডিসহ অন্যান্য দল যোগ করলে বিজেপি শিবিরের ৮৮–এর বদলে বিরোধী শিবিরের এই মুহূর্তে সদস্যসংখ্যা ১৫৬। তাই বিলটির ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

তবু আসাম থেকে শুরু করে গোটা উত্তর–পূর্বাঞ্চল অশান্ত। সহিংস ঘটনাও ঘটছে। বিজেপির জোট শরিক অসম গণপরিষদের তিন মন্ত্রী রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে গতকালই সারা আসাম ছাত্র সংস্থা বা আসু নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আসুই আসাম আন্দোলনের মূল হোতা।

রাজ্যসভার বিবেচনাধীন নাগরিকত্ব সংশোধন বিলটিতে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে শরণার্থী হয়ে আসা অমুসলিমদের শর্ত সাপেক্ষে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে। তাই এ নিয়ে বিরোধিতা শুরু হয়েছে।

আসামের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসও বয়কট করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের আঁচ পৌঁছেছে দিল্লি, বেঙ্গালুরু প্রভৃতি শহরেও।