কংগ্রেস সাংসদ মৌসম গেলেন তৃণমূলে

নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলে যোগ দেন মৌসম বেনজির নূর। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলে যোগ দেন মৌসম বেনজির নূর। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ‘নিষ্প্রভ’ কংগ্রেসের ‘শেষ দুর্গ’ হিসেবে পরিচিত মালদহ জেলার দলীয় সাংসদ মৌসম বেনজির যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। রাজ্যে বিজেপি ঠেকাতেই ‘দিদি’ বা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে এই যোগদান, জানিয়েছেন মৌসম। মালদহ কংগ্রেসের প্রাণপুরুষ হিসেবে পরিচিত প্রয়াত বরকত গণি খান চৌধুরীর ভাগনি মৌসম।

পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসের ঘাঁটি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত হয়ে আসছে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলা। এই জেলায় কংগ্রেসকে দাঁড় করিয়েছেন বরকত গণি খান চৌধুরী। কংগ্রেসও চলেছে গণিখানের আদর্শ আর হাত ধরে। গত ২০১৪ সালের সর্বশেষ সাংসদ নির্বাচনেও বিজেপি এবং তৃণমূলের ঝড়ের মুখেও এই জেলার দুটি আসনেই জিতেছিল কংগ্রেস। সাংসদ হয়েছিলেন গনিখান পরিবারের তরুণ নেত্রী মৌসুম বেনজির নূর এবং আবু হাসেম খান চৌধুরী ডালু।
সেই কংগ্রেস শিবিরে এবার এসে পড়েছে তৃণমূলের ঝাপটা। ঝাপটায় প্রথম উড়ে গেল কংগ্রেসের সাংসদ মৌসুম বেনজির নূর। এই সাংসদ গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের সচিবালয় নবান্নে গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করে যোগ দেন তৃণমূলে। মমতাও এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন মৌসুম এবার তৃণমূলের টিকিটে লড়বেন মালদহ উত্তর কেন্দ্র থেকে। মৌসুম আবার ছিলেন মালদহ কংগ্রেসের জেলা সভাপতিও। মৌসুম নূর তৃণমূলে যোগদান করে বলেছেন, রাজ্যবাসী চায় মমতাকে। মমতাই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মুখ। তিনিই পারেন রাজ্যবাসীর উন্নয়ন করতে। তৃণমূলে যোগদানের সময় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী সহ তৃণমূলের নেতারা।

তৃণমূল আগেই ঘোষণা দিয়েছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাদের রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনই চাই। অর্থাৎ এই রাজ্যে শূন্য হাতে ফিরতে হবে বিরোধী সব দলকে। যদিও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ৩৪টি আসন। আর কংগ্রেস ৪টি, বাম দল সিপিএম ২টি এবং বিজেপি ২টি আসন। এবার তৃণমূল ঘোষণা করেছে, এবার ৪২টি আসনেই জিতবে তৃণমূল।

যদিও সাম্প্রতিক ইন্ডিয়া টুডের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এই রাজ্যে বাম দল এবং কংগ্রেস শিবির খারাপ করলেও বিজেপি পেতে পারে ৭টি আসন। কংগ্রেস একটি আসন। আর বাম দল নাও পেতে পারে আসন।
মৌসুমের যোগদানের পরপরই কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, এই ঘটনায় কংগ্রেসের তেমন ক্ষতি হবে না। তিনি পাশাপাশি এই মালদহ উত্তরের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বলেছেন, এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হচ্ছেন ইশা খান চৌধুরী। ইশা খান এখন দক্ষিণ মালদার সুজাপুর কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক। সম্পর্কে মৌসুমের মামাতো দাদা। তিনি আবার মালদহ দক্ষিণ’এর কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীর ছেলে।