বাড়ি ফিরতে ১০ মিনিট দেরি, মোবাইলেই তালাক!

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই তিন তালাককে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। তবে বন্ধ হচ্ছে না তিন তালাক। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই তিন তালাককে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। তবে বন্ধ হচ্ছে না তিন তালাক। ছবি: সংগৃহীত

বাড়ি ফিরতে মাত্র ১০ মিনিট দেরি করেছিলেন স্ত্রী। আর এটাকে অপরাধ ভেবে মোবাইলে তিন তালাক দিয়ে দিলেন স্বামী। সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তর প্রদেশে। তিন তালাকের ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন স্ত্রী।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, অসুস্থ দাদিকে দেখতে ওই নারী তাঁর মা-বাবার বাড়ি গিয়েছিলেন। স্বামী তাঁকে আধ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসতে বলেছিলেন। ওই নারী এতে সম্মতিও দেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, আধঘণ্টার সময়ের মধ্যে ফিরতে পারেননি তিনি। এতেই রেগে ফায়ার স্বামী স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দেন। ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের ইটাহ এলাকায়।

ওই নারী বলেন, ‘আমি অসুস্থ দাদিকে দেখতে মা-বাবার বাড়ি গিয়েছিলাম। আমার স্বামী ফোনে আমাকে নির্দেশ দেন আধঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসতে। আমি মাত্র ১০ মিনিট দেরি করেছি। এরই মধ্যে আমার ভাইয়ের মোবাইলে ফোন করে আমাকে চান। ফোনটা ধরামাত্রই তিনবার ‘তালাক’ বলে দেন আমার স্বামী। ওর এই কথায় আমি হতভম্ব হয়ে যাই।’

ওই নারী শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে যৌতুকের কারণে নিয়মিত শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারেরও অভিযোগ এনেছেন। তিনি এএনআইকে বলেন, ‘আমি যখনই বাড়িতে একা থাকতাম, ওরা আমাকে মারধর করত। এমনকি ওদের মারধরের জেরে একবার গর্ভপাতও করাতে হয়েছে। আসলে আমার মা-বাবা অত্যন্ত গরিব, ওদের কিছুই দিতে পারিনি আমরা। তাই আমার ওপর অত্যাচার করে।’

ওই নারী প্রশাসনের কাছে এর প্রতিকার চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না তাঁর কাছে। তিনি আরও বলেন, আমাকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ভারত সরকারের। প্রশাসন যদি তা না করতে পারে তাহলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।

ইটাহ এলাকার সরকারি কর্মকর্তা অজয় ভাদুরিয়া বলেন, তারা এ ঘটনায় তদন্ত করবেন। আর এ ঘটনার তদন্তের পরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভারতের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই তিন তালাককে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। তিন তালাককে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে লোকসভায় বিলও পাস হয়েছে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর। এ অপরাধে আইনে তিন বছরের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।