ভারতে কর্মহীনতার রেকর্ড

জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের (এনএসসি) যে প্রতিবেদন প্রকাশে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অনীহার অভিযোগ দুই পরিসংখ্যানবিদ পদত্যাগ করেছেন , আজ বৃহস্পতিবার তার নির্যাস প্রকাশ্যে এল। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৪৫ বছরে দেশে বেকারত্বের হার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জমানায় সর্বোচ্চ। ভারতের অর্থনৈতিক দৈনিক ‘বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকা এই দাবি করেছে। তারা বলেছে, অপ্রকাশিত ওই প্রতিবেদন তাদের হাতে এসেছে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭–১৮ সালে সারা দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৬ দশমিক ১ শতাংশ, যা গত ৪৫ বছরের যাবতীয় রেকর্ড তছনছ করে দিয়েছে।

স্বশাসিত সংস্থা এনএসসির দুই পরিসংখ্যানবিদ সদস্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান পি সি মোহানন ও জে ভি মীনাক্ষী গতকাল বুধবার পদত্যাগ করেন। তাঁদের অভিযোগ, চূড়ান্ত হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার গত ডিসেম্বর থেকে কর্মসংস্থান–সংক্রান্ত এই প্রতিবেদন প্রকাশ করছে না। সংস্থাকে বিন্দুমাত্র গুরুত্বও দিচ্ছে না। দেশে কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যান সম্পর্কে তাঁরা কোনো মন্তব্য না করলেও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা জানিয়েছে, ২০১৭–১৮ সালে দেশে বেকারত্বের হার আকাশ ছুঁয়েছে। ওই সালে শহরাঞ্চলের বেকারত্ব ছিল ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, গ্রামাঞ্চলে কিছুটা কম, ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। গড় ৬ দশমিক ১ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৬ সালে আচমকাই ১ হাজার ও ৫০০ রুপির নোট বাতিল করেন। ওই সিদ্ধান্তই গগনচুম্বী বেকারত্বের একমাত্র কারণ বলে বিরোধীরা মনে করেন। বিরোধী দাবি অনুযায়ী, নোট বাতিলের পাশাপাশি সারা দেশে অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) চালুর সিদ্ধান্ত বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়ে দাঁড়ায়। অথচ সরকার এই বাস্তবতাকে স্বীকার করতে চাইছে না। কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম বলেছেন, বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। এনএসসির রিপোর্ট সত্য প্রকাশ করে দিয়েছে। এই রিপোর্ট সরকারের ব্যর্থতার দলিল।

বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানিয়েছে, প্রতিবেদন অনুযায়ী গ্রামের ১৫–২৯ বছর বয়সী যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। ২০১১–১২ সালে এই বয়সীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ছিল ৫ শতাংশ। ২০১৭–১৮–তে তা বেড়ে হয়েছে তিন গুণেরও বেশি, ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। ওই বয়সী গ্রামীণ মহিলাদের বেকারত্বের হার গত ৬ বছরে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। গ্রামের শিক্ষিত পুরুষদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২০১৭–১৮ সালে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। ছয় বছর আগে ওই হার ছিল মাত্র ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।