পশ্চিমবঙ্গে আলাদা তদন্ত সংস্থা করছেন মমতা

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের দুর্নীতি রোধে কেন্দ্রীয় সরকারের গড়া কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এখন গোটা দেশেই আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। সেই ইডির আদলে পশ্চিমবঙ্গে একটি তদন্ত সংস্থা করতে চাইছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিবিআই ও ইডির জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলের বহু নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়ক। সিবিআই ও ইডির নানা মামলা চলছে শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। সারদা, রোজভ্যালি ও নারদ অর্থ কেলেঙ্কারি মামলায় জড়িয়ে আছেন তৃণমূলের নেতারা। এটাই মেনে নিতে পারছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বারবার বলেছেন, তাঁর দলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কদের হেনস্তা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআই ও ইডিকে হাতিয়ার করেছে। ভারতের লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসায় এসব নেতাকে হেনস্তা করার জন্য এই দুটি সংস্থার কর্মকর্তারা মাঠে নেমেছেন। তৎপর হয়েছেন। নতুন করে শুরু করেছেন দায়ের করা মামলার তদন্তও।

এটাই মেনে নিতে পারছেন না মমতা। তাই তিনি গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের উদ্দেশে হুংকার ছেড়ে বলেছিলেন, তাঁদের যেমন সিবিআই আছে, তাঁর সরকারেরও আছে সিআইডি। আর গতকাল শুক্রবার তিনি ইডির পাল্টা একটি সংস্থা গড়ার ঘোষণা দিলেন। এদিনই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি ইডির পাল্টা সংস্থা ‘ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট’ বা ডিআরআইই গড়ার কথা ঘোষণা করেন। এর অধীনে থাকবেন ৬১ জন কর্মকর্তা। প্রধান হবেন একজন আইএএস কর্মকর্তা। এই লক্ষ্যে বিচারের জন্য গড়া হবে আলাদা আদালত। গড়া হবে আলাদা থানাও। এই সংস্থা মূলত রাজ্যের আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করবে। এই সংস্থা থাকবে রাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে।

মমতা বলেছেন, সিবিআই, ইডির মতো সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। তাই তিনি বুধবার বলেছেন, ‘আমাদের হাতে সিআইডি ও এসটিএফ আছে। আছে আমাদের আর্থিক দুর্নীতি ধরার জন্য ব্যবস্থাও। আমরা চাইলে এ নিয়েও তদন্ত করতে পারি।’ এ ব্যাপারে তিনি শিশু পাচার, গ্যাস কেলেঙ্কারিতে একাধিক বিজেপি নেতার জড়িত থাকার প্রসঙ্গও তোলেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিআইডি, এসটিএফের মতো সংস্থার মাধ্যমে রাজ্য সরকার তদন্ত করতে পারলেও শুধু আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত করার জন্য কোনো আলাদা সংস্থা রাজ্যের হাতে নেই। তাই রাজ্য সরকার আর্থিক দুর্নীতি তদন্তের জন্য এই নতুন সংস্থা গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে।