'চোর ধরো, জেলে ভরো'

ভারতের লোকসভার নির্বাচন কড়া নাড়ছে ভারতজুড়ে। সব রাজনৈতিক দলও মাঠে নেমে পড়েছে। করছে সভা–সমাবেশ। গোটা দেশে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেস। আর পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপি। এ বছরের এপ্রিল-মে মাসে লোকসভার ৫৪৩টি আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। ফলে, নির্বাচনকে সামনে রেখে নেমে পড়েছে ভারতের সব জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল। তারা নতুন নতুন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় থাকতে চাইছে। তেমনই ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’ নামের এক আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বামফ্রন্ট।

৩ ফেব্রুয়ারির সফল ব্রিগেড সমাবেশের পর উজ্জীবিত বামফ্রন্ট এবার নতুন করে চিটফান্ডের প্রতারিত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়ে শুরু করছে ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’ আন্দোলন। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই আন্দোলন শুরু করার কথা বলেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনি বলেছেন, এই আন্দোলন শুরু হবে রাজ্যজুড়ে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে। শেষ হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি। এই আন্দোলনের মূল দাবি পশ্চিমবঙ্গে সারদা এবং রোজভ্যালি চিটফান্ডকাণ্ডে দরিদ্রদের প্রতারিত করা ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে জেলে ভরে বিচার করা। পাশাপাশি দরিদ্রদের আত্মসাৎ করা অর্থ অবিলম্বে ফেরত দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে রাজ্য সরকারকে।

এখন এই চিটফান্ডকাণ্ডের হোতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নতুন করে চাঙা হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই মাঠে নেমে পড়েছে। আর এই নিয়ে শঙ্কা বেড়েছে রাজনৈতিক দলের মধ্যে। কেননা, এই দুর্নীতিকাণ্ডের সঙ্গে বেশি জড়িয়ে পড়েছে শাসক দল তৃণমূলের অনেক নেতা, সাংসদ, বিধায়ক ও মন্ত্রী।

গত ১৯ জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেস কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে বিশাল সমাবেশ করে তাদের শক্তি প্রদর্শন করেছে। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি বামফ্রন্টও বিশাল ব্রিগেড সমাবেশ করে জানান দিয়েছে তাদের শক্তির দাপট তৃণমূলের চেয়ে কম নয়। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু গতকাল মঙ্গলবার দাবি করেছেন, তৃণমূলের থেকে বেশি মানুষের সমাগম হয়েছিল তাঁদের ব্রিগেড সমাবেশে। বিজেপি বলেছে, তারা মার্চ মাসে এই সমাবেশ করে দেখিয়ে দেবে তৃণমূল ও বামফ্রন্টের চেয়ে তাদের শক্তি কত বেশি। কংগ্রেস এখনো ব্রিগেড সমাবেশের দিন–তারিখ ঘোষণা করেনি।

নির্বাচনকে সামনে রেখেই সব দলের এই তোড়জোড়। পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে লোকসভার ৪২টি আসন। এই ৪২ আসনের সব কটি আসন জিতবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ঘোষণা দিয়েছেন, তারা এই রাজ্যে এবার ২৩টি আসন পাবে। তবে বাম দল ও কংগ্রেস এখনো ঘোষণা দেয়নি তারা কয়টা আসন পেতে পারে।

সবশেষ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ৩৪টি আসন। আর কংগ্রেস ৪, বাম দল ২ এবং বিজেপি ২টি আসন পেয়েছিল।