অস্ট্রেলিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

অস্ট্রেলিয়ায় বন্যাকবলিত এলাকায় প্রায় সব গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। প্রায় ৭ হাজার বাড়িতে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ–সংযোগ। ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ায় বন্যাকবলিত এলাকায় প্রায় সব গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। প্রায় ৭ হাজার বাড়িতে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ–সংযোগ। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মুষলধারে বৃষ্টির অবসান ঘটায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বন্যাকবলিত এলাকার অনেক বাসিন্দাই আজ বুধবার নিজেদের বাড়ি ফিরেছে। বন্যার পানিও ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। তবে বন্যার ফলে রাজ্যের সাধারণ জনজীবন এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বন্যায় দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে ঘটেছে।

বন্যাকবলিত এলাকায় প্রায় সব গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় ৭ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৩ সালে দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলস ও কুইন্সল্যান্ড রাজ্যে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের ফলে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির সমমানের ক্ষতি হয়েছে এবারের বন্যায়। ঘূর্ণিঝড়ে তখন প্রায় ১২৬ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলারের ক্ষতি হয়। রাজ্যের সবচেয়ে বেশি বন্যার কবলে পড়া টাউনসভিল শহরে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির অনুপাত ছিল প্রায় ৫০৬ মিলিমিটার।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে মুষলধারে বৃষ্টির অবসান ঘটায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বন্যাকবলিত এলাকার অনেক বাসিন্দারাই বুধবার বাড়ি ফিরেছেন। ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে মুষলধারে বৃষ্টির অবসান ঘটায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বন্যাকবলিত এলাকার অনেক বাসিন্দারাই বুধবার বাড়ি ফিরেছেন। ছবি: সংগৃহীত

শহরের প্রায় ২০ হাজার বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। শহরের ঝুঁকিপূর্ণ ১ হাজার ঘরবাড়ি থেকে ৮ শর বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিভিন্ন সাহায্যের জন্য জরুরি সেবায় আবেদন আসে ৯ হাজারেরও বেশি। এদিকে বন্যার পানিতে জনবসতিতে সাপ ও কুমির উঠে আসারও বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ইনস্যুরেন্স কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিমা বাবদ ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার দাবি করেছে ৬ হাজারের বেশি গ্রাহক।

কুইন্সল্যান্ডে প্রতিবছরই বর্ষার মৌসুমে গড়ে প্রায় ২ হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। তবে রাজ্যের বেশির ভাগ শহরেই বৃষ্টির পানিপ্রবাহ করে দেওয়ার পদ্ধতি রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গত ২০ বছরে এবারই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজ্যটিতে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি সেবার পাশাপাশি অতিরিক্ত সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গতকাল মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন কুইন্সল্যান্ডে যান। সবাইকে সহযোগী মনোভাব নিয়ে একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি। সরকার বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।