কলকাতা বইমেলায় কাল 'বাংলাদেশ দিবস'

কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলায় কাল রোববার উদযাপিত হবে ‘বাংলাদেশ দিবস’। কাল বইমেলা চত্বরজুড়ে বাজবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গান। অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ সেমিনার। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রথিতযশা কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও শিল্পীরা। 

কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন হয় গত ৩১ জানুয়ারি। শেষ হবে ১১ ফেব্রুয়ারি। ৩১ জানুয়ারি বিকেলে কলকাতার সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে ঘণ্টা বাজিয়ে বইমেলার উদ্বোধন করেন গুয়েতেমালার প্রখ্যাত সাহিত্যিক অধ্যাপক ইউডা মোরেস। এবারের বইমেলার থিম কান্ট্রি এই গুয়েতেমালা। এই বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন গুয়েতেমালার ভারতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জিয়োবান্নি কাসতিয়ো।
কলকাতা বইমেলা এবার ৪৩ বছরে পা দিয়েছে। এর আয়োজক কলকাতার পাবলিসার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড।
প্রতিবছরের মতো এবারও বইমেলায় উদযাপিত হচ্ছে বাংলাদেশ দিবস। কাল বিকেলে বইমেলার এসবিআই মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়েছে ‘বাংলা সাহিত্য ও বঙ্গবন্ধু ’শীর্ষক এক আলোচনা সভার। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সম্মানিত অতিথি থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের তথ্য, সংস্কৃতি ও পর্যটন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশের সাংসদ অসীম কুমার উকিল, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব বেগম আখতারি মমতাজ এবং শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
এই আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করবেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। প্রধান আলোচক থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। আর আলোচনায় অংশ নেবেন কলকাতার বিশিষ্ট সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহমেদ, কবি নজরুল ইস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া এবং বাংলাদেশের লেখক সুভাষ সিংহ রায়।

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে দর্শকদের ভিড়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে দর্শকদের ভিড়। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

এই বইমেলা শুরুর দিন থেকেই ভিড় জমে যায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন নির্মিত হয়েছে ঢাকার রোজ গার্ডেনের আদলে। প্রতিদিনই বইপ্রেমীরা ভিড় জমান বাংলাদেশ স্টলে। তাঁরা খোঁজ করেন তাঁদের বাংলাদেশের প্রিয় লেখকের বই।
কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্য) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেছেন, এবার ব্যাপক সাড়া মিলেছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে। কলকাতার বইপ্রেমীরা, রাজ্যের বিভিন্ন স্থান আর অন্যান্য রাজ্যের বাঙালি বইপ্রেমীরা এবারও ছুটে এসেছেন কলকাতা বইমেলায়। আগ্রহভরে তাঁরা বাংলাদেশের বই দেখেছেন। বই কিনেছেন।

বাণিজ্য সচিব এ কথাও বলেছেন, বাংলাদেশের গবেষণামূলক বই, ইতিহাসসমৃদ্ধ বই, নিরীক্ষাধর্মী বইয়ের প্রতি বইপ্রেমীদের আগ্রহ ছিল বেশি। তা ছাড়া বাংলায় লেখা কম্পিউটারের বিভিন্ন বইও কিনেছেন কলকাতার বইপ্রেমীরা।

এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের ৪৫টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ৮টি প্রকাশনা সংস্থা সরকারি।

বাংলাদেশ ছাড়াও বইমেলায় যোগ দিয়েছে ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, জাপান, চীন, ইরান, কোস্টারিকা, স্পেন, স্কটল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, অর্জেন্টিনাসহ বিশ্বের ২১টি দেশের প্রকাশনা সংস্থা। যোগ দিয়েছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রকাশকেরাও। এবার বইমেলায় সব মিলিয়ে ৮০০ স্টল হয়েছে। এর মধ্যে ২০০টি লিটল ম্যাগাজিনের।