বাতিল হয়ে যাবে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল?

ভারতের রাজ্যসভায় পেশ হয়নি নাগরিকত্ব সংশোধন বিল। ছবি: রয়টার্স
ভারতের রাজ্যসভায় পেশ হয়নি নাগরিকত্ব সংশোধন বিল। ছবি: রয়টার্স

নাগরিকত্ব সংশোধন বিল রাজ্যসভায় পেশ করা গেল না। গতকাল সোমবার তড়িঘড়ি বিলটি তালিকাভুক্ত করা হলেও, বিরোধীদের হই-হট্টগোলে আজ মঙ্গলবার রাজ্যসভার অধিবেশন সারা দিনের জন্য মুলতবি করে দেওয়া হয়। কাল বুধবার সংসদের সংক্ষিপ্ত শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিন। বিলটি পেশ করা না গেলে লোকসভায় পাস হওয়া সত্ত্বেও তা বাতিল হয়ে যাবে।

নাগরিকত্ব বিল সংশোধন করে বিজেপি সরকার বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে চলে আসা অ-মুসলমান শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দিতে চায়। এর বিরোধিতায় নেমেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্য। শুধু বিজেপির শরিকরাই নয়, এই অঞ্চলের অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও এর বিরোধিতায় নেমেছে। অনেকে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে বেরিয়েও এসেছে। তারা চায়, বিজেপি সরকার বিলটি প্রত্যাহার করে নিক।

কিন্তু বিল প্রত্যাহারের পথে হাঁটতে রাজি নয় বিজেপি। এটা তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। সম্প্রতি অশান্ত আসামে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিল নিয়ে আসামবাসীর অযথা উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী বিল নিয়ে দলের আগ্রহের কথা জানালেও বিজেপির একাংশ মনে করছে, এই বিল প্রত্যাহার না হলে আসাম তো বটেই, লোকসভা ভোটে পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই দলের ফল খারাপ হবে। মণিপুরে ইতিমধ্যেই একজন সরকারি খেতাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে ভূপেন হাজারিকার ছেলেও তাঁর বাবাকে দেওয়া ‘ভারতরত্ন’ খেতাব নিতে অস্বীকার করেছেন।

সংসদ অশান্ত থাকলেও, হইচইয়ের মধ্যে বিল পেশ করার ঘটনা অতীতে একাধিকবার হয়েছে। আগামীকাল বুধবার রাজ্যসভায় তা হতে পারে। নাগরিকত্ব বিল রাজ্যসভায় পেশ হলে বিলটি জিইয়ে থাকবে। এইভাবে জিইয়ে রাখা হয়েছিল বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত নির্ধারণ চুক্তি (এলবিএ) বিল। সেই ক্ষেত্রে লোকসভার ভোটের পর নতুন সরকার বিলটি আনা-না আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু বিল পেশ না করা গেলে আনতে হবে নতুন বিল।