পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের তারকা প্রার্থীরা বাদ পড়বেন!

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়েছে। দিকে দিকে নেমে পড়েছেন সব রাজনৈতিক দলের নেতারা। নানা জরিপে পশ্চিমবঙ্গে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল এবং এরপর বিজেপি, বাম দল ও কংগ্রেস।

ইতিমধ্যে তৃণমূল ঘোষণা দিয়েছে, এই রাজ্য থেকে শূন্য হাতে এবার ফিরে যেতে হবে সব বিরোধী দলকে। একাই ৪২টি আসন জিতবে তৃণমূল। মনোনয়নের ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে চাইছে দলটি। বলা হচ্ছে, তৃণমূলের তারকা সাংসদদের অনেকেই মনোনয়ন পাচ্ছেন না এবার।

পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে লোকসভার ৪২টি আসন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা দিয়েছেন, সব কটি আসন তাঁর দলই পাবে। রাজ্যের দ্বিতীয় শক্তিশালী দল বিজেপি বলছে, তারা জিততে চলেছে ২২টি আসন। অন্যদিকে, বাম দলের দাবি, তাদের ফলাফল সবশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে। ২০১৪ সালে বাম দল জিতেছিল দুটি আসনে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ আসন। কংগ্রেস জিতেছিল চারটি আসনে এবং বিজেপি জিতেছিল দুটি আসনে। আর তৃণমূল জিতেছিল ৩৪টি আসনে।

ভারতের সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, তৃণমূল তাদের ৩৪টি আসনের সাংসদদের অনেককে এবার মনোনয়ন দিতে চাইছে না। বিশেষ করে তারকা সাংসদদের পাঁচ বছরের কাজের খতিয়ান সন্তুষ্ট করতে পারেনি দলনেত্রীকে। তাই এবার দলনেত্রী চাইছেন তারকা প্রার্থীদের মনোনয়ন না দিয়ে রাজনৈতিক প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে। বলা হচ্ছে, মমতার দৃষ্টিতে রাজনৈতিক প্রার্থীরা যতটা কাজ করেন বা কাজ করতে পারেন, সেভাবে তারকা প্রার্থীরা কাজ করতে পারেন না বা করেন না। তাই তারকা প্রার্থীদের বাদ দিয়ে রাজনৈতিক প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন মমতা।

তবে তৃণমূল সাংসদদের মধ্যে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খান যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। বোলপুরের তৃণমূল সাংসদ অনুপম রায়কে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রোজভ্যালি কাণ্ডে জড়িয়ে জেল খেটেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল। তাঁদের এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলে শোনা যাচ্ছে। আবার উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ বেনজির মৌসুম নুর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। তাঁকে ওই কেন্দ্রেই তৃণমূল মনোনয়ন দিতে পারে।

এ ছাড়া তৃণমূল সাংসদদের মধ্যে বাঁকুড়ার সাংসদ অভিনেত্রী মুনমুন সেন, মেদিনীপুরের সাংসদ অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়, ঘাটালের সাংসদ অভিনেতা দেব, হাওড়ার সাংসদ ফুটবল তারকা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, আলিপুরদুয়ারের সাংসদ দশরথ তিরকে, কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়, পুরুলিয়ার সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাত, ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সোরেনের মনোনয়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিস আলীকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য দাবি তুলেছে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। এ ছাড়া তৃণমূল সাংসদ ও দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছেন না। তিনি চাইছেন রাজ্যসভার সাংসদ হতে। অন্যদিকে, রোজভ্যালি দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ থাকায় কলকাতা উত্তর আসনে তাঁকে ফের প্রার্থী করা নাও হতে পারে।

সূত্রমতে, আসানসোল কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সংগীতশিল্পী বাবুল সুপ্রিয়কে ওই আসন থেকে হটানোর জন্য তৃণমূল প্রার্থী করতে পারে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে।