কোনো দেশ আমাদের পক্ষে বলছে না: পাকিস্তানি সাবেক কূটনীতিক

হুসেইন হাক্কানি
হুসেইন হাক্কানি

পাকিস্তানের অভ্যন্তরে জঙ্গি শিবিরে ভারতের হামলা নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে কোনো দেশ কথা বলছে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক কূটনীতিক হুসেইন হাক্কানি। যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের সাবেক এই রাষ্ট্রদূত পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এমনকি চীনও পাকিস্তানের পক্ষে কিছু বলছে না। এ ঘটনায় এটা স্পষ্ট, জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যাপারে বিশ্ব আর ধৈর্য রাখতে পারছে না।

পিটিআইকে দেওয়া পৃথক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী মইদ ইউসুফ উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে জইশ-ই-মুহাম্মদের সবচয়ে বড় প্রশিক্ষণ শিবির বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। দেশটি দাবি করেছে, এই হামলায় ৩০০ জঙ্গি নিহত হয়েছে। ১৯৭১ সালের পর পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) এটাই প্রথম হামলা।

পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হুসেইন হাক্কানি বলেন, ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষে কোনো দেশ কথা বলেনি। এমনকি আইন ভঙ্গ করে পাকিস্তানের আকাশসীমায় ভারতের হামলা চালানোর ঘটনায় পাকিস্তানকে সমর্থন না করে চীন দুই পক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।

হাক্কানি পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীবিরোধী ব্যক্তি। পাকিস্তানের মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো ক্রমাগত তাঁকে হুমকি দিয়ে থাকে। এখন তিনি থিংক-ট্যাংক হাডসন ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক হিসেবে আছেন।

হাক্কানি বলেন, পাকিস্তানের অতি উচ্চ জাতীয়তাবাদী আবেগ হয়তো বিষয়টি মানতে চায় না। তবে জঙ্গিদের নিরাপদ স্বর্গের ব্যাপারে বিশ্বের ধৈর্য ক্ষীণ হয়ে আসছে। আর এটা পাকিস্তানের জন্য মোটেও ভালো কিছু নয়।

পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী মোয়িদ ইউসুফকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ঠ লোক বলা হলেও তিনি হাক্কানির সঙ্গে এ বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন।

পিটিআইকে মইদ ইউসুফ বলেন, বৈশ্বিক সমর্থন ভারতকেই দেওয়া হচ্ছে। সেখানে পাকিস্তান বা ভারতের আকাশপথে যে লড়াই হচ্ছে, তা নিয়ে তত মাথা ঘামানো হচ্ছে না। তাই পাকিস্তান এই হামলার ব্যাপারে সর্বোচ্চ মনোনিবেশ করবে এবং এটাকে তীব্রতর হতে দেবে না। আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি স্ববিরোধী মনে হলেও এটা সত্য, ভারতের এ হামলা যত সফল হবে, পাকিস্তানের জন্য অন্য পথ খোঁজা ততই কঠিন হবে।

মইদ ইউসুফ বলেন, পারস্পরিক হামলায় দুই দেশ গুরুতর সংকটের দিকে যাবে। এটা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। কারণ ভারত ও পাকিস্তান জানে কীভাবে সংকট তৈরি হয়। এ উত্তেজনা থামাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের মতো তৃতীয় কোনো পক্ষের ওপর কখনো নির্ভর করতে জানে না।