ট্রাম্প-কিমের বৈঠকে কী হলো?

হ্যানয়ে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
হ্যানয়ে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

বেশ ঢাক পিটিয়ে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বৈঠকে বসেছিলেন ট্রাম্প আর উন। শেষতক কিছুই হলো না। না কোনো চুক্তি, না কোনো সমাধান। বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোর মতো কোনো চমকের জন্ম না দিয়েই বৈঠক শেষ।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন বললেন কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বললেন—হবে না। ব্যস, কোনো ঐকমত্য ছাড়াই আজ বৃহস্পতিবার বৈঠক শেষ।

বৈঠকের পরে হ্যানয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের ট্রাম্প নিজেই এ কথা জানান। তিনি বলেন, তৃতীয় সম্মেলনের বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা হয়নি বৈঠকে।

ট্রাম্প বলেন, ‘অবরোধের বিষয়ে কথা হয়েছে। তাঁরা পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বলেন। তবে আমরা তা করতে পারি না।’

ট্রাম্প-কিমের এ বৈঠকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে আজকের দিনের পরিকল্পনায় বলা হয়, আজ আলোচনার পর দুই পক্ষ ‘যৌথ চুক্তিতে’ স্বাক্ষর করবে। এরপর মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন দুই নেতা। তবে সব জল্পনা–কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ফলাফল শূন্য হয়ে শেষ হলো বৈঠক।

হ্যানয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং–উন। ছবি: রয়টার্স
হ্যানয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং–উন। ছবি: রয়টার্স

এর আগে গত মঙ্গলবার এ বৈঠকের উদ্দেশ্যে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে পৌঁছান দুই নেতা। সকালে নিজের ব্যক্তিগত ট্রেনে করে ভিয়েতনাম পৌঁছান কিম। রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ান হ্যানয়ের নই বাই বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর গতকাল সন্ধ্যায় একান্ত বৈঠক করেন ট্রাম্প ও কিম। পরে নৈশভোজ করেন তাঁরা। একে অপরের প্রশংসা করেন। তাঁরা সিঙ্গাপুরে তাঁদের প্রথম বৈঠক খুবই সফল বলে মন্তব্য করেন। আজ এ সম্মেলনের দ্বিতীয় দফা বৈঠক ছিল।

ট্রাম্পের বক্তব্য অনুয়ায়ী, কিম বলেছেন তিনি ইয়ংবিয়ন পারমাণবিক চুল্লি নিষ্ক্রিয় করতে ইচ্ছুক। এটিই উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক প্রকল্পের সবচেয়ে বড় চুল্লি। তবে এটি নিষ্ক্রিয় তিনি করবেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ওপর অবরোধ তুলে নেয়; যা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।

সংবাদ সম্মেলনে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে কী আলোচনা হয়েছে, জানতে চান সাংবাদিকেরা। ট্রাম্প বলেন, ‘আমার কথা—এটা করতেই হবে। আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র থেকে পরিত্রাণ পেতেই হবে।’

কোনো চুক্তি ছাড়া বৈঠক শেষ হলেও ট্রাম-কিমের এই শীর্ষ সম্মেলন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলেছে; যা এক বছর আগেও ভাবা যায়নি। ২০১৭ সালের শেষ দিকে ট্রাম্প ও কিম তর্কযুদ্ধ, কাদা-ছোড়াছুড়ি, পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে জড়িয়েছিলেন। নজিরবিহীন কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় পাল্টায় এ দৃশ্যপট। আজকের বৈঠকের পর কিমের সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি বেশ লোক, বেশ একটি চরিত্র।’ তিনি তাঁদের সম্পর্ক ‘খুবই দৃঢ়’ বলে মন্তব্য করেন।