ভোটের মুখে আসামে বিজেপিতে ভাঙন

বিজেপির বিক্ষুব্ধ সাংসদ রাম প্রসাদ শর্মা। ছবি: সংগৃহীত
বিজেপির বিক্ষুব্ধ সাংসদ রাম প্রসাদ শর্মা। ছবি: সংগৃহীত

লোকসভা ভোটের মুখে উত্তর–পূর্ব ভারতের বিজেপিতে ভাঙন। দলের সাংসদ রামপ্রসাদ শর্মা (আরপি শর্মা বলেই পরিচিত) এদিন বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন। শুধু বিজেপিই নয়, তাদের শরিক দল অসম গণপরিষদেও (অগপ) ভাঙন অব্যাহত।

আগামী ১১ এপ্রিল উত্তর–পূর্ব ভারতের আট রাজ্যেই শুরু হচ্ছে লোকসভার ভোট। কংগ্রেস ইতিমধ্যেই এই অঞ্চলের ২৫টির মধ্যে ৮টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। বিজেপি এখনো কোনো তালিকাই প্রকাশ করেনি। কিন্তু তার আগেই ভাঙনের মুখে বিজেপি। তেজপুর থেকে গতবার নির্বাচিত বিজেপির লোকসভা সদস্য রামপ্রসাদ শর্মা এদিন বিজেপি থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

সামাজিক গণমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, দলে অপমানিত বোধ করেই এই সিদ্ধান্ত। ১৫ বছর তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ২৯ বছর।

সেই সম্পর্ক আজ থেকে ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করেন তিনি। দল তাঁকে টিকিট দেবে না। এটা বুঝতে পেরেই আরপির এই সিদ্ধান্ত। শুধু বিজেপির সাংসদই নন, তিনি আসাম গোর্খা সম্মেলনেরও সভাপতি।

বিজেপি এই আসনে আসামের অর্থমন্ত্রী তথা উত্তর–পূর্ব ভারতের গণতান্ত্রিক জোটের (নেডা) আহ্বায়ক হীমন্ত বিশ্বশর্মাকে প্রার্থী করতে চলেছে। এমন আশঙ্কা থেকেই আরপির দলত্যাগ।

বিজেপির পাশাপাশি অগপতেও চলছে বিক্ষোভ। ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন দলের প্রবীণ নেতা লাচিত বরদলৈ, গিরীন্দ্রকুমার বড়ুয়ার মতো প্রথম সারির নেতারা।

অগপর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তথা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লকুমার মহন্ত প্রকাশ্যেই দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তিনি জানান, লোকসভা ভোটে বিজেপি বা তাদের দোসর অগপর হয়ে ভোট প্রচারে নামবেন না।

আসামে বিজেপির আরেক শরিক বিপিএফেরও সমস্যা বাড়ছে। আসামের সমাজ কল্যাণমন্ত্রী প্রমীলা রানী ব্রহ্মকে কোকরাঝাড় কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে বিপিএফ। কিন্তু বিভিন্ন বড় সংগঠন তাঁকে মানতে নারাজ। তাঁরা প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছেন ইউপিপিএল প্রার্থী ইউজি ব্রহ্মকে। এই অবস্থায় কোকরাঝাড়ের বর্তমান সাংসদ নবকুমার শারানিয়ার দাবি, বিজেপি-বিপিএফ জোট প্রার্থী প্রমীলা অন্তত ১ লাখ ২০ হাজার ভোটে হারবেন।

প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর দলে বিক্ষোভ আরও বাড়তে পারে। তাই এখন দেখার এই ক্ষোভ-বিক্ষোভ বিজেপি নেতারা কীভাবে সামলান।

গতবার আসামের ১৪টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ৭টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছিল তিনটি। বাকি চারটির মধ্যে তিনটি পেয়েছিল আঞ্চলিক দল এআইইউডিএফ এবং একটি নির্দল প্রার্থী।